পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা একটি সত্যি গল্প Vè) উদ্যতফণা ফণিণীকে সামনে দেখলে পথিক যেমন লাফিয়ে উঠে দশ হাত পিছিয়ে যায়, তেমনি চক্ষের পলকে কল্পশেখর তাকে আপনার আলিঙ্গন মুক্ত করে।’ লাফিয়ে উঠে সেই পাষাণ শয্যার কাছ থেকে পিছিয়ে গেল। তারপর বাজাহতের মতো শূন্যদৃষ্টিতে তারি। সারানিশার আলিঙ্গনবন্ধ নিদ্রাভিভুতার দিকে তাকিয়ে রইল। নিদ্রাভিভুত আলিঙ্গনচু্যতা হয়ে ধীরে ধীরে চোখ মেলল। পাষাণ শয্যা ত্যাগ করে’ উঠে বসল। তারপর কল্পশেখরের দিকে তাকিয়ে দেখল ! কল্পশেখর কৰ্কশকণ্ঠে জিজ্ঞেস করল—“কে তুমি ?” “আমি তরুণী ।” কল্পশেখর পাগলের মতো হেসে উঠল। সে হাসি আশে পাশে পাহাড়ে পাহাড়ে প্ৰতিহত হ’য়ে কোন এক প্রেতলোকের বিকট বীভৎস শব্দের মতো প্ৰতিধ্বনিত হয়ে উঠল। চীৎকার করে নিশির সঙ্গিনীর মুখমণ্ডলের দিকে দেখিয়ে দিয়ে ঘূণার স্বরে বলে উঠল—“তুমি-তুমি তরুণী-এই লোল চৰ্ম্ম, বিরল দস্ত, মুখের উপরে শুকনো চামড়ার মতো দুখান ঠোঁট-দীপ্তিহীন কোটরগত ঐ দু'টি চোখ-মাথায় কাশফুলের মতো সাদা একরাশ চুল-তুমি-তুমিতরুণী ?” জরাগ্রস্ত রমণী করুণ বিষাদের হাসি হেসে ধীরে ধীরে উঠে বসল। তারপর কল্প শেখরের কাছে এসে তার হাতখনি ধরে” তাকে হ্রদের তীরে জলের কিনারে নিয়ে গেল । তারপর আপনার কৃশ হস্তের শুষ্ক অঙ্গুলি বিস্তার করে জলের দিকে দেখিয়ে দিয়ে বললে“দেখ ।” কল্পশেখর দেখুল ৷