পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*sóv * * সবুজ পত্র : কাৰ্ত্তিক ও অগ্রহরিণ, ১৩২৫ কাইত, বিজলী একেবারে মুগ্ধ হয়ে তার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকত। কখন বা ছুটে গিয়ে জ্যোতিকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে বিজলী আবেগভরে তার চোখে-মুখে চুম্বন বর্ষণ করত। আবার থেকে থেকে এক একদিন বিজলীর ভিতর প্রাণের জোয়ার এমন প্ৰবল হয়ে আসত, ক্ষুদ্র এক ৰালিকা তার বেগ আর সামলে নিতে পারত না । - মাল্লারা তাদের গানের সুরে যখন ভরে তুলে, আকাশের গায়ে ঢেলে দিত, আর সেই এক নারী-প্ৰাণের বিচ্ছেদ-বেদন নিশীথ প্ৰকৃতির তিমির গড় দেহখানি চুইয়ে, গড়িয়ে গড়িয়ে বিজলীর প্রাণের উপর এসে করত, তখন জ্যোতিকে বিজলী যদিও তার বুকের ভিতর রাখত, স্বপ্নদ্রষ্টার মনের মতো প্ৰাণটি তার দেহের অন্তঃপুর থেকে বেরিয়ে এসে, কারা যেন প্ৰতীক্ষায় অস্থির হয়ে ছুটাছুটি করুত-যার বস-বাস বিজলীর কল্পনার ত্ৰিসীমানার ভিতর কোথায়ও ছিল না। এক একদিন বিজলী তার শোবার ঘরের জানুলার গরাদে হাত দুখানি রেখে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখাত, সুমুখের বিস্তীৰ্ণ মাঠ জ্যোৎস্নাতে একেবারে ভরে গিয়েছে; আর প্রকৃতি তার সমগ্র আকাশ দিয়ে সেই উন্মুক্ত ক্ষেত্রের একটি অশ্বথ-বৃক্ষকে বেষ্টন করে ধরে হাসি-ভরা মুখখানি নিয়ে তার উপর যেন বুকে পড়েছে। গাছের কচি কচি পাতাগুলো মন্দ মন্দ বাতাসে থর থর করে কঁাপিছে, সে কঁপুনি যেন প্রিয়জনের আলিঙ্গন-বন্ধ কোন নারীরই প্ৰাণের শিহরণ। এ দৃশ্যটি দেখতে দেখতে বিজলী একেবারে আত্মহারা হয়ে যেত, কারা যেন সন্ধানে তার প্ৰাণটি কোথায় নিরুদেশ-যাত্রা করত। , , কুমারীশের শাস্ত্ৰ মতে নারীর কৰ্ত্তব্য, পুরুষের ইচ্ছায় বাহনটি হয়ে