পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮২ সবুদ পত্র জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৫ যে আমাদের বর্তমান উন্নতির অর্থ তাদের মত পণ্ডিত লােকের আবির্ভাব না আর ও কিছু, এবং ভারতর্ষের ঐক্য ইংরেজি ‘ইডিয়ামের ঠিক কতটা বিশুদ্ধতার উপর নির্ভর করে, অথবা কোনাে কোনাে বৈদিক যজ্ঞের মন্ত্রোচ্চারণের মত হ্রস্বদীর্ঘের বিন্দুমাত্র গােল ঘটিলেই সর্বনাশ, সে সব প্রশ্ন জিজ্ঞাসার আর সাহসই হয় না। আমাদের দেশের ঠিক এই দলটিই বাঙ্গালীর স্কুল কলেজে বাঙ্গলা ভাষার শিক্ষা দিবার প্রস্তাবে একবারে চমকিয়া উঠিয়াছেন। চমকাই- বারই কথা! শিক্ষার অর্থই হইল ইংরেজি ভাষা শিক্ষা; তাকেই যদি খর্ব করা যায় তবে শিক্ষার আর বাকী থাকে কি ? কেননা সাহিত্য বল, ইতিহাস বল, দর্শণ বল, বিজ্ঞান বল, সবই হইল উপলক্ষ্য। যেমন কথাচ্ছলে নীতি শিক্ষা, এও তেমনি নানা ছলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা। নিতান্ত লক্ষীছাড়া ভিন্ন পথের মােহ বাড়ীর কথাটাই আর কার ভূল হয়। এদের মধ্যে যাঁরা কলেজের অধ্যাপক তাঁরা আরও কঠিন প্রশ্ন তুলিয়াছেন। কুপারের কবিতার সৌন্দৰ্য্য, কি অ্যাডিশনের রসিকতার রস তারা বাঙ্গলা ভাষায় ছেলেদের বুঝাইবেন কেমন করিয়া ? সমস্যা গুরুতর। যে সব পুথিতে ঐ সৌন্দর্যের বিশ্লেষণ ও রসিকতার ব্যাখ্যা আছে সেগুলিও যে ইংরেজি ভাষাতেই লেখা। আর এ কথাও ঠিক অনেক ইংরেজ লেখকের কবিত্ব ও রসিক আমরা ভক্তিভরে গলাধঃকরণ করিতেছি, মাতৃভাষার শাদা চোখে দেখিলে যে ভক্তি নাও টিকিতে পারে। প্রমাণ, য়ুরােপ মহাদেশের লােকেরা, যারা ভাষা শিখিবার উপায় স্বরূপে নহে, সাহিত্য হিসাবেই ইংরেজি সাহিত্য পড়েন তারা হয়ত সে সব লেখকের নামও শােনেন নাই। এমন কি খােদ ইংলণ্ডেই