পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ, ১৩৫ ছাড়িয়াই দিয়াছি। আমরা ভাবিতেছি সেইদিনের কথা যেদিন বাঙ্গলা ভাষায় বাঙ্গালী কি ভাবে এবং লেখে তাহার খবর না রাখিলে বড় সাহেবের দেশের বড় পণ্ডিতেরও চলিবে না। বাহিরের লােকের কাণে এ কথা নিশ্চয়ই ভিত্তিহীন গর্বের মত শুনাইবে। কিন্তু অস্বীকার করিবার উপায় নাই যে আজ শিক্ষিত বাঙ্গালীর ইহাই অন্তরের কথা এবং সেই কারণেই বাঙ্গালীর শিক্ষার প্রধান কথা। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীল মােহরে যারা advancement of learning ‘জ্ঞানের প্রসার’ ছাপ বসাইয়া ছিলেন advancement কথাটার কি অর্থ তাদের মনে ছিল বলা কঠিন। অবশ্য আমরা জানি বেকনের যে পুথির নাম হইতে কথাটি লওয়া, সে পুথির প্রতিপাদ্য হইল, কেমন করিয়া নূতন জ্ঞানের আবিষ্কারে জ্ঞানের পরিধি বিস্তার হয়। কিন্তু এও জানি পশ্চিমের অনেক কথা পূব দেশে আসিলে অর্থের বদল হয়। সুতরাং অসম্ভব নয় যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সীলমােহরে ঐ কথাটার আদি অভিপ্রেত অর্থ, জ্ঞানের প্রসার’ নয় জ্ঞানের প্রচার। জ্ঞানের সীমা বিস্তার নয়, পূর্বদেশের অন্ধকারে পশ্চিমের আলােক বিস্তার। সে যাই হােক এ কথা নিশ্চয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল কলেজে যে শিক্ষা আর হইল তাহার একমাত্র লক্ষ্য ইংরেজি সাহিত্য ও ইংরেজি ভাষার সাহায্যে আধুনিক য়ুরােপের জ্ঞান বিজ্ঞানের বার্তা দেশের মধ্যে প্রচার করা ; বাঙ্গালীকে এই নুতন সাহিত্য ও নূতন জ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত করা। এই জ্ঞান ও বিদ্যা পরের হাত হইতে লওয়াই যে চরম সার্থকতা নয়,