পাতা:সমবায়নীতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
সমবায়নীতি

রবীন্দ্রনাথ যে লিখিয়াছেন ‘আমার কোনো কোনো আত্মীয় তখন সমবায়তত্ত্বকে কাজে খাটাবার আয়োজন করছিলেন’, নগেন্দ্রনাথ তাঁহাদের অন্যতম।

 ১৯২৭ সালের ‘২রা জুলাই আন্তর্জাতিক সমবায় উৎসবের দিনে কলিকাতায় [অ্যালবার্ট হলে] বঙ্গীয় সমবায়-সংগঠন-সমিতি কর্তৃক অনুষ্ঠিত উৎসবের সভাপতিরূপে রবীন্দ্রনাথ যে বক্তৃতা দেন’, শ্রীহিরণকুমার সান্যাল ও শ্রীসজনীকান্ত দাসের লিখিত তাহার অনুলিপি বক্তা-কর্তৃক সংশোধিত হইয়া ভাণ্ডার পত্রে ‘ভারতবর্ষে সমবায়ের বিশিষ্টতা’ নামে মুদ্রিত হয়।

 শ্রীনিকেতনে ১৩৩৫ সালের ২৭ মাঘ সর্‌ ড্যানিয়েল হ্যামিলটনের সভাপতিত্বে বর্ধমান বিভাগীয় সম্মিলনের প্রথম অধিবেশন হয়―রবীন্দ্রনাথ তাহার উদ্‌বোধনকালে যে প্রবন্ধ রচনা করেন তাহা ঐ উপলক্ষ্যে ‘সমবায়নীতি’ নামে পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হয় (২৭ মাঘ ১৩৩৫)।

 ‘জনসাধারণের নিজের অর্জনশক্তিকে মেলাবার উদ্যোগ’, ‘অনেক মানুষ একজোট হইয়া জীবিকানির্বাহ করিবার উপায়’, যাহাতে মানুষ ‘মিলিয়া বড়ো হইবে’, ‘শুধু টাকায় নয়, মনে ও শিক্ষায় বড়ো হইবে’―সমবায়ের এই মূলতত্ত্ব দেশের উন্নতির পন্থারূপে রবীন্দ্রনাথের আরও অনেক রচনায় আলোচিত হইয়াছে―নিজের জমিদারিতে ও পরে বিশ্বভারতীতে তাহা কার্যতঃও প্রয়োগ করিবার চেষ্টা করিয়াছেন, ‘রবীন্দ্রজীবনী’তে তাহার বিবরণ আছে―“রবীন্দ্রনাথ যখন প্রজাদের মধ্যে সমবায়শক্তি জাগরূক করিবার কথা ভাবিতেছিলেন তখন বাংলাদেশে সরকারী কো-অপারেটিভ আন্দোলন আরম্ভ হয় নাই”। সমবায়-সমিতি-রূপে পরিকল্পিত ‘হিন্দুস্থান বীমা কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠার সময়েও তিনি উহার সহিত বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন।