পুরুষদের সঙ্গে স্নেহভক্তিপরিহাসের বিচিত্র সম্বন্ধ; গৃহকার্য্যের ভার যা স্বভাবতই মেয়েরা ভালবাসে তাও তার অভাব নেই। এবং ওরি মধ্যে রামায়ণ মহাভারত দুটো একটা পুরাণ পড়্বার কিম্বা শোন্বার সময় থাকে, এবং সন্ধ্যাবেলায় ছোট ছোট ছেলেদের কোলের কাছে টেনে নিয়ে উপকথা বলাও একটা স্নেহের কাজ বটে। বরং একজন বিবাহিত রমণীর বিড়াল শাবক এবং ময়না পোষ্বার প্রবৃত্তি এবং অবসর থাকে কিন্তু বিধবাদের হাতে হৃদয়ের সেই অতিরিক্ত কোণটুকুও উদ্বৃত্ত থাক্তে প্রায় দেখা যায় না।
এই সকল কারণে, তোমাদের যে-সকল মেয়ে প্রমোদের আবর্ত্তে অহর্নিশি ঘূর্ণমান কিম্বা পুরুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় প্রবৃত্ত, কিম্বা দু’টো একটা কুকুর শাবক এবং চারটে পাঁচটা সভা কোলে করে’ একাকিনী কৌমার্য্য কিম্বা বৈধব্য যাপনে নিরত তাঁদের চেয়ে যে আমাদের অন্তঃপুরচারিণীরা অসুখী এ-কথা আমার মনে লয় না। ভালবাসাহীন বন্ধনহীন শূন্য স্বাধীনতা নারীর পক্ষে অতি ভয়ানক— মরুভূমির মধ্যে অপর্য্যাপ্ত স্বাধীনতা গৃহীলোকের পক্ষে যেমন ভীষণ শূন্য।
আমরা আর যা’ই হই, আমরা গৃহস্থ জাতি; অতএব বিচার করে’ দেখতে গেলে আমরা আমাদের রমণীদের দ্বারেই অতিথি; তাঁরাই আমাদের সর্ব্বদা বহু যত্ন আদর করে’ রেখে দিয়েচেন। এম্নি আমাদের সম্পূর্ণ আয়ত্ত করে’ নিয়েছেন যে আমরা ঘর ছেড়ে দেশ ছেড়ে দু’দিন টিঁক্তে পারিনে; তাতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয় সন্দেহ নেই কিন্তু তাতে করে’ নারীরা অসুখী হয় না।
আমাদের সমাজে স্ত্রীলোকদের সম্বন্ধে যে কিছুই করবার নেই, আমাদের সমাজ যে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ সর্ব্বসম্পূর্ণ এবং আমাদের স্ত্রীলোকদের অবস্থা তার একটা প্রমাণ, এ-কথা বলা আমার অভিপ্রায় নয়। আমাদের রমণীদের শিক্ষার অঙ্গহীনতা আছে এবং অনেক বিষয়ে তাঁদের