পাতা:সম্রাট্‌ ও সম্রাট্‌-মহিষীর ভারত পরিদর্শন - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-পরিদর্শন । 6ł করিতেছেন ; তিনি যে সব আশ্বাস ও প্ৰতিশ্রুতি দান করিলেন, তাহা ভবিষ্যতে পালন করিবেন, এবং, যাহাতে তাহার উদার শাসন প্ৰণালী প্ৰজাগণকে বুঝাইতে পারেন, তজ্জন্য সাধ্যানুসারে চেষ্টা করিবেন। তাহার অন্ধ্যকার এই অঙ্গীকারপত্র উদারতা, পরহিতসংকল্প ও দয়ার দ্বারা প্ৰবৰ্ত্তিত ; ইহাতে ধৰ্ম্মসম্বন্ধে প্ৰজাগণের স্বাধীনতা রক্ষিত হইল এবং ভারতবাসিগণ অন্যান্য ব্রিটিশ প্ৰজার সমকক্ষ হইয়া কি কি অধিকার লাভ করিলেন, তাহা বিঘোষিত হইল । ঘটনাসকুল বৰ্ত্তমান ঐতিহাসিক যুগের পৃষ্ঠায় এই ঘোষণাপত্ৰ উজ্জ্বলতম অক্ষরে লিখিত থাকিবে । এখন হইতে ভারতের ইতিহাসের এক অভিনব অধ্যায় উদঘাটিত হইল। রুশিয়া বাদ দিলে সমগ্ৰ য়ুরোপ যত বৃহৎ, ভারতবর্ষ তদপেক্ষা বৃহত্তর। এই বিশাল ভূভাগ কেবল যে এক রাজশক্তির অধীন হইল তাহা নহে, পরস্তু এক ব্যক্তির নেতৃত্বে পরিচালিত হইতে লাগিল। কিন্তু, ভারতবর্ষের প্রাদেশিক রাজ্যগুলি সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হইয়া ঐক্যসূত্রে গ্রথিত হইতে কতক সময় লাগিয়াছিল। যুদ্ধবিগ্রহের পরে রাজা প্ৰজার পরস্পরের প্রতি সন্দেহ দূরীভূত হইতেও কতকটা VSVS *" সময় অতিবাহিত হইয়াছিল। তৎকালে যাতায়াতের এরূপ সুবিধা ছিল না । ভারতবর্ষ কতকগুলি খণ্ডরাজ্যে বিভক্ত ছিল। তাঁহাদের মধ্যে ভাববিনিময়ের কোন উপায় ছিল না । তাই রাজপ্ৰতিনিধি লর্ড ক্যানিং, মহারাজ্ঞীর ঘোষণাপত্ৰ প্ৰকাশ্যভাবে প্রচারের জন্য একস্থানে মহাসভা আহবান না করিয়া, ভারতীয় নানা প্রদেশে পরিভ্রমণ করিয়াছিলেন এবং প্ৰত্যেক খণ্ড রাজ্যের রাজধানীতে স্বয়ং উপস্থিত হইয়া এতৎসংক্রান্ত স্বকীয় কৰ্ত্তব্য সাধন করিয়াছিলেন। এইরূপে রাজকীয় দরবার ও রাজা প্ৰজার সম্মিলনের ব্যবস্থায় ভারতীয় প্ৰাচীন রাজভক্তির সংস্কার জাগরিত হইল এবং প্রজাপুঞ্জ বুঝিতে পারিল যে, এই পরিবর্তন পরম মঙ্গলকর হইবে । কিন্তু, প্ৰাচ্যদেশে রাজনৈতিকক্ষেত্রে ভয় ও সন্দেহ দূর হওয়া সময়সাপেক্ষ। ১৮৭৫-৭৬ খৃঃ অব্দে যে দিন “প্রিন্স অব ওয়েলস” (ভাবী রাজা সপ্তম এডোয়ার্ড) ভারতবর্ষে পদার্পণ করিলেন, সেদিন মহারাণীর ঘোষণাপত্রের উদার প্রতিশ্রুতি যে শুধু বাক্যচ্ছটা নহে, প্ৰজাপুঞ্জ যে তাহার উপর নির্ভর করিতে পারে, একথা সকলে বুঝিতে পারিল। যুবরাজের পদার্পণে শাসনপ্রণালীর অধিকতর