পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োবিংশ প্রবন্ধ । }(t) শাস্ত্ৰ ৰলিয়াছেন আত্মা দ্রষ্টব্য, শ্রোতব্য, মন্তব্য, এবং নিদিধ্যাসিতব্য। সুতরাং আত্মদর্শনের পর আত্মার বিষয় শ্রবণ করিবে, তাহার পর আত্মার বিষয় বিচার করিবে এবং অবশেষে আত্মার ধ্যান করিবে। অতএব আত্মার ধ্যানের বিধানই শাস্ত্রের চরম উদ্দেশ্য, ব্ৰহ্ম কি বস্তু তাহার উপদেশ দেওয়া শাস্তুের চরম উদেশ্য নহে । বিশেষতঃ ব্রহ্মের স্বরূপ জ্ঞান জীবের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ, জড়পদার্থ, মন, বুদ্ধি প্রভৃতি যাহা কিছু আমরা অনুভব করিতে পারি, তাহ বাস্তবিক বস্তু নহে সরস্থ শক্তির বিকাশ বা গুণমাত্র। মনে কর, আমি একখণ্ড কাষ্ঠ দেখিতেছি । পরীক্ষা করিয়া দেখিলেই বুঝা যায় যে কাষ্ঠখণ্ড হইতে একপ্রকার জালোক প্রতিফলিত হইয়া আমার চক্ষুতে পড়িয়া আমার অন্তঃকরণে রূপের জ্ঞাম জন্মাইতেছে এবং ইহা ভিন্ন কাষ্ঠখণ্ড দেখা আর কিছুই নহে। সুতরাং শক্তির এক প্রকার বিকাশমাত্রই রূপ। উক্ত কাষ্ঠখণ্ড স্পর্শ করিলে উহা কঠিন বোধ হয় এবং উহাকে উত্তোলন করিবার চেষ্টা করিলে উহ! ভারী বোধ হয়। ইহাও শক্তির বিকাশ ভিন্ন আর কিছুই নহে। মামার হস্ত যে দিকে যাইতে চাহে সে দিকে উক্ত কাষ্ঠখণ্ড আমার হস্তকে যাইতে দিতেছে না। এই গুণকেই কঠিনত্ব ও গুরুত্ব বলা যায়, এবং ফলতঃ ইহা শক্তির বিকাশ ভিন্ন আর কিছুই হইতে পারে না । এইরূপে বিচার করিয়া দেখিলেই জানা যায় যে, গুণ বা শক্তির বিকাশ ভিন্ন গুণের আস্পদ বা মূলশক্তি জীবের ইন্দ্রিয়গোচর হইতে পারে না । বেদান্তশাস্ত্ৰমতে গুরু জাম্পদ বা মূলশক্তিই আত্মা বা ব্ৰহ্ম। স্বতরাং আত্মা বা ব্ৰহ্ম জীবের ইন্দ্রিয় মন ও বুদ্ধির অতীত। তাহার তটস্থ ভাব ভিন্ন স্বরূপভাব কেহ জানিতে পারে না। অতএব ব্রহ্মের স্বরূপ জ্ঞান ৰেদান্তশাস্ত্রের প্রতিপাদ্য নহে। ব্ৰহ্মকে তটস্থভাবে জানাইয়া তাহার আলোচনা ও উপাসনা ক্রিয়ার উপদেশই বেদান্তশাস্ত্রের তাৎপৰ্য্য। শ্রুতি বলিয়াছেন—যাহার দ্বারা এই সমস্ত জানা যায় তাহাকে কি দিয়া জানিবে ? যিনি দৃষ্টির দ্রষ্ট প্তাহাকে দেখা যায় না ; যিনি শ্রবণের শ্রোতা তাহাকে শুনা যায় না ; যিনি জ্ঞানের জ্ঞাতা তাহাকে জানা যায় না। ৮ গীত বলিয়াছেন—“আত্মা