সরল বেদান্ত দশন । جون সেইরূপ ভুতমাত্রা সকল প্রজ্ঞামাত্রায় অর্পিত এবং প্রজ্ঞামাত্রা সকল প্রাণে অপিত। অতএব ভৃগুমুনি প্রাণকেই ব্ৰহ্ম বলিয়া স্থির করিয়া পিতাকে জানাইলেন। কিন্তু পিতা আবার বলিলেন তোমার এ সিদ্ধান্তও ঠিক নহে। তুমি আবার তপস্যা কর। ভৃগুমুনি আবার একাগ্রমনে বিচার করিয়া দেখিলেন যে মন বা চিত্ত না থাকিলে ইক্রিয়গণ কোন কৰ্ম্মই করিতে পারে না। যদি একমনে কোন বিষয় চিন্তা করা যায় তখন অন্ত কোন পদার্থ ইঞ্জিয়পথে আসিলেও তাহ ইন্দ্রিয়গোচর হয় না। আরও দেখা যায় যে জীবের মনোরাজ্যে জড় জগৎ হইতে পৃথক, সুখ দুঃখ প্রভৃতি মানসিক ব্যাপার সকল সৰ্ব্বদাই বর্তমান রহিয়াছে। কেবলমাত্র অচেতন শক্তি ও ইন্দ্রিয়শক্তি হইতে সেই মানসিক ব্যাপার সকলের জন্ম স্থিতি ও লয় কিছুতেই সম্ভবে না। সুতরাং পিতার উপদেশমত যদি সমস্ত জগতের একটিমাত্র মূল কারণ থাকে তাহা হইলে সেই মূল কারণটা এমন হওয়া চাই যাহা হইতে এই (১) অচেতন শক্তি সকল (২) এই অচেতন শক্তি সকলকে নানাভাবে অবভাসক (প্রকাশক) ইন্দ্রিয়শক্তি সকল এবং (৩) সুখ দুঃখ ইত্যাদি মানসিক ব্যাপার সকল জন্মিতে, ও যাহাতে ইহাদের স্থিতি ও লয় হইতে পারে। - সেই মূল কারণের অন্বেষণ করিয়া ভৃগুমুনি দেখিলেন যে, স্বপ্লাবস্থায় এই বাহ জগৎ আমাদের ইঞ্জিয়গোচর থাকে না। কিন্তু তথাপি স্বপ্লাবস্থায় আমরা বাহা জগতের ন্যায় জগৎ প্রত্যক্ষ দেখি এবং সেই স্বপ্নময় জগতের পদার্থ সকলের রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ ও শব্দ অনুভব করি। অধিকন্তু মুখ চুঃখ কল্পনা প্রভৃতি মানসিক ব্যাপার সকলও স্বপ্লাবস্থায় বিদ্যমান থাকে। স্বপ্লাবস্থায় আমরা কিছুমাত্র বুঝিতে পারি না যে সেই স্বপ্নদৃষ্ট পদার্থ সকলের বাস্তবিক অস্তিত্ব নাই। কিন্তু স্বপ্নদৃষ্ট পদার্থ সকল যে বাস্তবিক অলীক এবং মনঃকল্পিত মাত্র সে বিষয়ে কোন সন্দেহ হইতে পারে না। স্বপ্নদৃষ্ট পদার্থ ও মানসিক ব্যাপার সকল যে আমাদের মনের কল্পনা ভিন্ন অস্ত কিছু নহে তাহ আমাদের নিদ্রা; ভাঙ্গিবামাত্র আমরা অন্ত কোন
পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৭৪
অবয়ব