পাতা:সরস গল্প - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মূলো-র্যাডিশ-হার্স র্যাডিশ; -আগে আপনি একটা ইংরেজি আবৃত্তি করুন । -করবেন তাহলে ? মিস সোরাবাজির খড়গের মত সূক্ষ্ম ও উগ্ৰ নাসিকাকে ক্ষমা করিলাম, মেয়েটি অত্যন্ত চালবিহীন ও অমায়িক, তখনই সে ব্রাউনিঙের “বৈয়াকরণের শবযাত্ৰা’ নামে বিখ্যাত কবিতাটি সুন্দরভাবে আবৃত্তি, করিয়া আমাদের মুগ্ধ করিল। পুনরায় আমাকে একটি রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করিতে হইল। এবার হাত-মুখ নাড়িয়া শিশির ভাদুড়ীর অনুকরণে “বন্দীবীর’ আবৃত্তি করিয়া, ইংরেজিতে ভাবাৰ্থ বুঝাইয়া দিলাম। পূর্বের কবিতাটি অপেক্ষ এইটিই মিস সোরাবাজির বেশি ভাল লাগিয়াছে, তাহা তাহার কথার সুরে ও চোখ-মুখের ভাবে আমার বুঝিতে দেরি হইল না । আমায় বলিল-দেখুন। মিঃ রায়, টাগোরের কবিতার ইংরিজি অনুবাদ পড়েছি কিন্তু বাংলা ভাষার ধ্বনি আর ঝংকারের মধ্য দিয়ে যে ওসব কাবত এমন চমৎকার শোনায়, তা আমি আজ এই প্ৰথম জানলাম । এর আগে একবার বাংলা আবৃত্তি শুনেছিলাম কলেজে, সে তেমন কিছু নয়। আমার বাংলা শেখার বড় ইচ্ছে, কি করে শেখা যায় বলতে পারেন ? মূলে দেখিলাম খুব খুশী হইয়াছে-কবিতা শুনিয়া নয়, কারণ সে সূক্ষ্ম রসবোধ তাহার ছিল না-বাংলা কবিতা ও প্ৰকারান্তরে বাঙালীর প্ৰশংসা করা হইতেছে এইজন্য । লোকটা অন্ধ বাঙালীভক্ত । বলিল-জালু, তুমি মিঃ রায়ের কাছে কেন বাংলা শেখ না ? বেশ ভাল হবে মিস সোরাবাজি পুনরায় আবদারের ভঙ্গিতে তাহার সুঠাম শুভ্র গ্রীবাটি দুলাইয়া বলিল-শেখাবেন আমাকে মিঃ রায় ? আমি রোজ আপনার বাসায় আসব এক ঘণ্টা করে ? মুলো পরম উৎসাহের সুরে বলিল-হঁ্যা হাঁ্যা বেশ, বেশ ! ११