পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਤਣ যোগাসনে বসিয়া সামনে খবরের কাগজ বিছাইয়া ঝুকিয়া কাগজ পড়িতেছে । কি ভাবে কথাটা বলা যায় ? কি ভাবে ব্যাপকে জানানো যায়, আমি তোমার বাড়ী ছাড়িয়া চলিলাম ? মাথা ঘুরিয়া, গা কঁাপিয়া যোগমায়া অস্থির হইয়া পড়ে, কি ভালে যে শেষ পৰ্য্যন্ত কথাটা বলিয়া বসে নিজেই ঠিকমত বুঝিতে পারে না । সত্যাপ্রিয় আগেই মূখ তুলিয়াছিল, সহজভাবে বলে, “যামিনী নিয়ে যাবে ? আচ্ছা । কবে যাবি ?” যোগমায়া বলে, “আজ ।” সত্যপ্রিয় বলে, “ বেশ ।” যোগমায়ার পৃথিবী অন্ধকার হইয়া যায়। শুধু আশা নয়, যোগমায়ার বিশ্বাস ছিল সত্যপ্রিয় কখনো তাকে পাঠাইতে রাজি হইবে না, রাগ করিবে, বকুনি দিবে, তাকে বুঝাইবে—আর সে তখন কঁাদিয়া কাটিয়া অনর্থ করিবে, কাদিতে কঁাদিতে বলিবে যে, তোমার জন্যেই তো সব গোলমাল, তুমি কেন ওকে অপমান করিলে ! তার বদলে, একি ! এক কথায় তাকে ঘাওরার অনুমতি দিয়া দিল ? এখন তো আর না। গিয়ে উপায় থাকবে না । সত্যপ্ৰিয় খবরের কাগজ পড়িতে মন দেয় । কঁাদিতে কঁাদিতে যোগমায়া বলে, “আমি কিন্তু আর ফিরে আসব। না বাবা, আমায় আর আসতে দেবে না ।” সত্যপ্ৰিয় অনুমানে বলে, “বেশ তো ।” SoS