পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুনহুৱতী রাগ দুঃখ ক্ষোভ বিস্ময় কৌতুক ফুটাইয়া তোলা আর মিলাইয়া দেওয়া, সব যেন তার নকল, কথাগুলি সমস্তই শোনা-কথার পুনরাবৃত্তি। কে জানে মা না মাসী না পিসী কে নিজেকে এমনভাবে উজাড় করিয়া মেয়েটির মধ্যে ঢালিয়া দিয়াছে । গোলমালটা অসাধারণ কিছু নয়, মধ্যবিত্ত বাঙালী পরিবারে সর্বদাই ঘটিতেছে। দাদার পছন্দ-কলা একটি মেয়েকে বাতিল করিয়া অপছন্দকরা এই মেয়েটিকে বিবাহ কৰায়, বিধাতে নগদ টাকা নিতে রাজি না হওয়ায় এবং সম্প্রতি একটা কারখানায় পঁচিশ টাকায় প্রায় কুলি-মজুরের একটা কাজে নেওয়ায়, দাদা ভয়ানক চটিয়া গিয়াছে। দাদার স্ত্রীর মতে, মায়ের পেটের ভাই তো দূরের কথা শত্রুও মানুষের সঙ্গে এমন শক্রিতা করে না - ‘আসলে, আমার জা-ই মত নষ্টের গোড়া । ক’দিন যা দেখেছি তাতেই বুঝেছি ভাসুর আমার লোক ভাল। আমায় দেখে ভাসুরের পছন্দ হয়েছিল, এক বন্ধুর কাছে বলেছিলেন উনি শুনেছেন; কিন্তু আমার জায়ের রংটা আমার চেয়ে একটু কম ফস কিনা, আর দেখতেও আমার মত সুন্দর নয়। কিনা।--তা, তার এখন বয়েস হয়েছে, ছেলে-মেয়ে হয়েছে তিনটি, প্ৰথম বয়েসে যেমন ছিল এখনও কি তেমনি চেহারা থাকে, রূপ-যৌবন মানষের দু’দিনে উবে যায়—আমায় দেখেই তাই অপছন্দ হলে গেল। তারপর যে মেয়েটিকে নিজে দেখে পছন্দ করল। -ওগো, বলনা সে দেখতে কেমন ছিল ? হাসছ যে ? আমার খুব অহঙ্কার হয়েছে ভাবিছ বুঝি ? না বাপু, আমি ওসপি অহঙ্কার বুঝি না, ন্যাকাৰ্ষি" পনার ধার ধারি না । সত্যি কথা বলব তাতে দোষ কি, তা সে নিজের ܦܐ(ܝܘܢ