পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

wrisseter তারপর যশোদা বয়স্কদের আসরে ভিড়িয়া গিয়াছে। কেউ মোটা, কেউ রোগ, কেউ দু’য়ের মাঝামাঝি, কিন্তু সকলেই শিথিল । কেউ এখনো সচেতন গর্বের সঙ্গেই ফস চামড়ার স্তিমিত রূপের ঝােঝ বিকীর্ণ করিতেছে, রূপের অভাবে আসিয়া-যাওয়ায় বয়সটা পার হইয়া কেউ স্বস্তি বোধ করিতেছে। কারও গায়ে গয়না বেশী, কারও গায়ে কম গয়নার ফ্যাসন গয়নার চেয়ে স্পষ্ট । কারও মুখে পান, কারও মুখে ভাঙ্গা বঁকা দাতগুলি রোজ সকালে কয়লার গুড়ার ঘষামাজ পায় বলিয়া বেশ সাদা । কয়েকটি মুখ যশোদার অপরিচিত। চারিদিকে অনেক নতুন বাড়ী উঠিয়াছে, অনেক নতুন লোক সঙ্গরতলীতে বাস করিতে আসিয়াছে। সুব্রত হয়তো এতদূর হইতে দু একজনকে টানিয়া আনিয়াছে, সহরতলীর পুরানো বাসিন্দা হইলেও যার মুখ চেনার সুযোগ যশোদার घgनेि नांदे । চেনা হোক, অচেনা হোক, যশোদা এদের চেনে। এরা সকলেই মধ্যবিত্ত ভদ্র-পরিবারের গিন্নি ৷ কপালে থাকিলে যশোদা নিজেই হয়তো এতদিনে এদের মত একজন গিন্নি হইয়া দাড়াইত । কিন্তু কোথায় যশোদার চাদ ? আত্মীয়-স্বজনভদ্রা সংসার ? সংসার না থাকিলে কি গিন্নি হওয়া চলে । মজুরদের নিয়া সে সংসার গড়িয়া গিন্নি হইয়া বসিয়াছিল, সত্যপ্ৰিয় সে সংসার ও তার ভাঙ্গিয়া দিয়াছে। যশোদার দুঃখ কষ্ট অভাব অভিযোগ রাগ দ্বেষ হিংসা গ্লানি সব কিছুর উপর চিরদিন স্থায়ী একটা প্ৰলেপ থাকিত-মজা লাগার। জিভের ঘায়ে মধুমাখা মলমের প্রলেপের মত। সেই প্রলেপের অভাবে যশোদার তনের সবগুলি আঘাতের ক্ষত আজকাল কটকট করে। CSR