পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&రిy : সাধনা। সামান্ত ব্যর্থ চেষ্টা দেখাইয়াই আপনাকে ঋণমুক্ত জ্ঞান করিয়া সম্পূর্ণ আত্মপ্রসাদ লাভ করিয়াছে আজ বঙ্কিমচন্দ্রের মৃত্যুর পরেও আমরা সভা ডাকিয়া সাময়িক পত্রে বিলাপস্থচক প্রবন্ধ প্রকাশ করিয়া আপনার কৰ্ত্তব্য সাধন করিতে উদ্যত হইয়াছি। তাহার অধিক আর কিছুতে হস্তক্ষেপ করিতে সাহস হয় না। প্রতিমূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা বা কোনরূপ স্মরণচিত্ন স্থাপনের প্রস্তাব করিতে প্রবৃত্তি হয় না। পূৰ্ব্ব অভিজ্ঞতা হইতে জানা গিয়াছে যে চেষ্টা করিয়া অকৃতকাৰ্য্য হইবার সম্ভাবনা অধিক । উপযুপিরি বারম্বার অকৃতজ্ঞতা ও অনুৎসাহের পরিচয় দিলে ক্রমে আর আত্মসন্ত্রমের লেশমাত্র থাকিবে না, এবং ভবিষ্যতে হইবে । - উপকার গ্রহণ করিবার শক্তির সঙ্গে সঙ্গে কৃতজ্ঞতার শক্তিও বাড়িতে থাকে। আমাদের দেশের জাতীয় স্বাস্থ্যের অবস্থা এখনও সেরূপ দাড়ায় নাই যাহাতে আমরা কোন মহৎলোকের দৃষ্টান্ত বা কাৰ্য্য অন্তরের মধ্যে যথার্থরূপে পরিপাক করিয়া লইয়া তাহার ফল উপলব্ধি করিতে পারি। আমাদের কানের কাছে ক্রমাগতই বলা আবশ্বক, তোমার এতখানি উপকার করা হইল, তুমি এতটা লাভ করিলে, তোমার এতখানি পথ নিষ্কণ্টক হইল, অমুক তোমার এত বড় সুহৃদ। এইরূপে কৃত্রিম উপায়ে মন্থন করিয়া কথঞ্চিৎ কৃতজ্ঞতা হৃদয়ের উপরিভাগে ফেনিল করিয়া তোলা যাইতে পারে, কিন্তু তাহাকে কোনরূপ স্থায়ী পদার্থে পরিণত করা যাইতে পারে না। দেখিতে দেখিতে কতকটা বাষ্প বিসর্জন করিয়া কোথাও কোন ৷ চিহ্নমাত্র না রাখিয়া তাহ বিলীন হইয়া যায়। । প্রবন্ধ লিখিয়া শোকের আড়ম্বর করিতেও কুষ্ঠিত বোধ করিতে । যে দেশের এমন দুরবস্থা সেই দেশেই মহৎ লোকের নিঃস্বার্থ বঙ্কিমচন্দ্র। &రి: আত্মবিসর্জনের আবগুক সৰ্ব্বাপেক্ষ অবিক, সহায়তা নাই, কত । کمہ ِ - জ্ঞতা নাই, অনুকুলত নাই, কেবল আপনার অন্তরের অপ্রতিহত - ধৈর্য্য ও উপবাসসহিষ্ণু অকাতর অনুরাগে চিরজীবন একাকী বসিয়া কাজ করিয়া যাইতে হইবে। - : সেই জন্য যে কয়েকটি মহাত্মা আমাদের দেশের কাজে জীবন বিসর্জন করিয়া গিয়াছেন তাহাদিগকে মিসরের বিস্তীর্ণ মরুভূমির - মধ্যে গুটিকতক নিঃসঙ্গ পিরামিডের মত দেখিতে হয়। এই মৃত সমভূমির মধ্যে তাহদের সমুন্নত মহিমা দ্বিগুণ দেদীপ্যমান হয় বটে । কিন্তু সেই সঙ্গে একটি স্ববিশাল বিষাদ হৃদয়কে বাপাকুল করিয়া । তোলে। হার এত বড় জীবন যাহার নিকট নিঃশেষে সমর্পিত হইয়াছে সে জানিতেও পারিল না তাহার কি সৌভাগ্য এবং সে চিরদিনের জন্য কতখানি লাভ করিল। " - . ভাবসম্পদকে আমরা এখনও যথার্থ সম্পদরূপে গণ্য করিতে । শিখি নাই। সাহিত্যরস যে আমাদের জীবনের খাদ্যপানীয়ের দ্যায় - অত্যাবস্তক তাহ এখনও আমরা সম্যক অনুভব করি না। বঙ্কিম- এ: চন্দ্রের স্বজনী শক্তি মাতৃভাষার সহিত মিশ্রিত হইয়া বাঙ্গালীর জীবনের মজ্জার মধ্যে যে প্রবেশ করিয়াছে, বঙ্কিমের প্রতিভা-উৎসের । ভাবপ্রস্রবন হইতে বাঙ্গালী যে নুতন জীবন-রস প্রাপ্ত হইয়াছে, - বঙ্কিমের আবির্ভাবের পূৰ্ব্বে যেরূপ ছিল বঙ্কিমের আবির্ভাবের পরে বাঙ্গালীর জীবনের গঠনে যে তদপেক্ষ এক নূতন বৈচিত্রের সঞ্চার হইয়াছে তাহ এখনও আমরা সম্যক উপলব্ধি করিতে পারি নাই। । এই স্থলে যদি আমি প্রসঙ্গক্রমে বঙ্কিমচন্দ্রের সহিত নিজের জীব নের সম্বন্ধ আলোচনা করি তবে ভরসা করি শ্রোতৃগণ আমার সেই । প্রগর্ভতাকে অহমিক জ্ঞান করিয়া অপরাধ লইবেন না। আজিকার এই শোকের দিনে বঙ্কিমের নিকট কেবল স্বজাতির নহে নিজের ।