পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

- do 8 সাধন। বঙ্কিম প্রাচীন হিন্দুশাস্ত্রের প্রতি ঐতিহাসিক বিচার প্রয়োগ করিয়া তাহার সার এবং অসার ভাগ পৃথক্করণ, তাহার প্রামাণ্য এবং অপ্রামাণ্য অংশের বিশ্লেষণ এমন নিঃসঙ্কোচে করিয়াছেন যে এখনকার দিনে তাহার তুলনা পাওয়া কঠিন। । বিশেষতঃ দুই শক্রর মাঝখান দিয়া তাহাকে পথ কাটিয়া চলিতে হইয়াছে। একদিকে, যাহারা অবতার মানেন না তাহার । শ্ৰীকৃষ্ণের প্রতি দেবত্বারোপে বিপক্ষ হইয়া দাড়ান। অন্যদিকে যাহার শাস্ত্রের প্রত্যেক অক্ষর এবং লোকাচারের প্রত্যেক প্রথাকে অভ্রান্ত বলিয়া জ্ঞান করেন তাহারাও, বিচারের লোহাস্ত্র দ্বারা শাস্ত্রের মধ্য হইতে কাটিয়া কাটিয়া কুঁদিয়া কুঁদিয়া মহত্তম মনুষ্যের আদর্শ অনুসারে দেবতাগঠনকাৰ্য্যে বড় প্রসন্ন হন নাই । এরূপ অবস্থায় অন্তকেহ হইলে কোন এক পক্ষকে সৰ্ব্বতোভাবে আপন দলে পাইতে ইচ্ছা করিতেন। কিন্তু সাহিত্য-মহারথী বঙ্কিম দক্ষিণে বামে উভয় পক্ষের প্রতিই তীক্ষ শরচালন করিয়া অকুষ্ঠিত ভাবে অগ্রসর হইয়াছেন – তাহার নিজের প্রতিভা কেবল তাহার একমাত্র সহায় ছিল। তিনি যাহা বিশ্বাস করিয়াছেন তাহ အာက္ႏိုင္ခဲ့ ব্যক্ত করিয়াছেন –বাকচাতুরী দ্বারা আপনাকে বা অন্তকে বঞ্চনা করেন নাই । - s “ কল্পনা এবং কাল্পনিকত দুইয়ের মধ্যে একটা মস্ত প্রভেদ আছে। যথার্থ কল্পনা, যুক্তি সংযম এবং সত্যের দ্বারা সুনির্দিষ্ট আকারবদ্ধ— কাল্পনিকতার মধ্যে সত্যের ভান আছে মাত্র কিন্তু তাহ অদ্ভুত আতিশয্যে অসঙ্গতৰূপে স্ফীতকায়। তাহার মধ্যে যেটুকু আলোকের লেশ আছে ধূমের অংশ তাহার শতগুণ। যাহাদের ক্ষমতা অল্প তাহারা সাহিত্যে প্রায় এই প্রধূমিত কাল্পনিকতার আশ্রয় লইয়া থাকে —কারণ, ইহা দেখিতে প্রকাওঁ কিন্তু | \ > * ...) | বঙ্কিমচন্দ্র। - ৫৫° । H . يع প্রকৃতপক্ষে অত্যন্ত লঘু। এক শ্রেণীর পাঠকেরা এইরূপ ভূরিপরিমাণ কৃত্রিম কাল্পনিকতার নৈপুণ্যে মুগ্ধ এবং অভিভূত হইয়া পড়েন এবং দুর্ভাগ্যক্রমে বাঙ্গলায় সেই শ্রেণীর পাঠক বিরল নহে। এই কাল্পনিকতার কল্যাণে আজকাল অনেক কৃতবিদ্য লোকের মুখেও এমন কথা শুনিতে পাওয়া যায় যে, ভারতবর্ষের প্রতি দেবা হুগ্রহের এবং ভারতবর্ষের সর্বশ্রেষ্ঠতার এক প্রমাণ এবং কারণ এই যে, পৃথিবীর মধ্যে কেবল ভারতরতবর্ষেই ষড়ঋতুর প্রাদুর্ভাব দেখা লেখক এই প্রকার অদ্ভুত আতিশয্যের কাছ ঘেঁষিয়া যান। এইরূপ অপরিমিত অসংযত কল্পনার দেশে বঙ্কিমের হায় আদর্শ আমাদের . পক্ষে অত্যন্ত মূল্যবান। কৃষ্ণচরিত্রে উদাম ভাবের আবেগে তাহার : কল্পনা কোথাও উচ্ছ জ্বল হইয়া ছুটিয়া যায় নাই। প্রথম হইতে শেষ পর্য্যন্ত সৰ্ব্বত্রই তিনি পদে পদে আত্মসম্বরণ পুৰ্ব্বক যুক্তির স্বনি র্দিষ্ট পথ অবলম্বন করিয়া চলিয়াছেন। যাহা লিথিয়াছেন তাহাতে তিভা প্রকাশ পাইয়াছে, যাহা লিখেন নাই তাহাতেও তাহার 255 으 “ཛད། তাহার অল্প ক্ষমতা প্রকাশ পায় নাই। । বিশেষতঃ বিষয়টি এমন, যে, ইহা কোন সাধারণ বাঙ্গালী লেখকের হস্তে পড়িলে তিনি এই সুযোগে বিস্তর হরিহরি, মরিমরি, হায় হায়, অশ্রপাত ও প্রবল অঙ্গভঙ্গী করিতেন এবং কল্পনার উচ্ছ,সি ভাবের আবেগ এবং হৃদয়াতিশয্য প্রকাশ ক রবার এমন অনুকুল অবসর কখনই ছাড়িতেন না ; সুবিচারিত তর্ক দ্বারা, সুকঠিন সত্যনির্ণয়ের স্পৃহা দ্বারা পদে পদে আপন লেখনীকে বাধ৷ দিতেন না ; t সৰ্ব্বজনগম্য সরল পথ ছাড়িয়া দিয়া স্বহ্মবুদ্ধি দ্বারা স্বকপোলকল্পিত একটা নুতন আবিষ্কারকেই সৰ্ব্বপ্রাধান্ত দিয়া তাহ