পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

তাঁর সহজ সরল ভাষার মাধুর্যে অসাধারণ এবং অপরূপ হয়ে উঠেছে, এইখানেই তাঁর বিশেষত্ব। তাঁর আঁকা বাংলার পল্লীপ্রাঙ্গণ, তুলসীতলা, শিবপূজা প্রভৃতির মধ্যে আমরা আমাদের প্রতিদিনের দেখা ছবিই দেখতে পাই, নূতন দৃষ্টিতে, অভিনব ঐশ্বর্যমণ্ডিত রূপে। তাঁর:

“নমো দেব মহাদেব নমো রাঙা পায়।
পোড়া হাড় ভস্ম ছাই, ও চরণে পায় ঠাঁই,
আকন্দ ধুতূরা ফুল গরবে দাঁড়ায়।…
এমন আপন ভোলা, এমন পরাণ খোলা,
এমন রজতগিরি শ্বেত শতদল,
পবিত্র শঙ্কর কোথাও দেখিনি কেবল।”

প্রভৃতি কবিতা “আমি চাই শিশু হেন উলঙ্গ পরাণ” “পতিতোদ্ধারিণী” প্রভৃতি কবিতা বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে থাকবে। অমিত্রাক্ষর ছন্দে ‘বীরকুমারবধ কাব্য’ রচনা ক’রে তিনি শিল্পকুশলতার পরিচয় দিয়েছেন, তাঁকে ও বিষয়ে তাঁর পিতৃব্য মাইকেল মধুসূদনের অনুকরণকারী হেমচন্দ্র বা নবীন চন্দ্রের সমকক্ষ ব’ললে অত্যুক্তি হবে না। মানকুমারী প্রধানতঃ মধুর এবং করুণরসের কবিতায় সাফল্য অর্জন করেছেন।

 কবিতার ক্ষেত্রে ঊনবিংশ শতাব্দীতে যিনি সব চেয়ে বেশী শক্তির পরিচয় দিয়েছেন, তাঁর নাম শ্রীমতী কামিনী রায়। ইনি বিখ্যাত ব্রাহ্ম নেতা চণ্ডীচরণ সেনের কন্যা, বরিশাল জেলার বাসন্দা গ্রামে ১৮৬৪ অব্দে এঁর জন্ম হয়। শৈশবে পিতামহের কাছে কবিতা ও স্তোত্র আবৃত্তি করতে করতে এঁর কবিতার স্ফুরণ হয়, আট বছর বয়স থেকে ইনি কবিতা লিখতে আরম্ভ