পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
১২৯

বসু-কন্যা, পাকুড় রাজকন্যা হেমনলিনী বা শৈলাঙ্গিনী দেবী প্রভৃতি নারী লেখিকারাও তাঁর বহু সহায়তা লাভ করেছেন, সে ঋণ তাঁরা কোন মতেই অস্বীকার ক’রতে পারেন না।

 বস্তুতঃ তাঁর পরেই বাংলা দেশে সর্ব বিষয়ে মেয়েদের সাহিত্যচর্চা ব্যাপকভাবে আরম্ভ হয়। “ফেটালগারল্যাণ্ড” (ফুলের মালা) এবং “আন্‌ফিনিস্‌ড্‌‌ সং” (কাহাকে) এই দু’খানি ইংরাজী উপন্যাস তিনি নিজেই ইংরাজীতে লিখেছিলেন।

 সেদিনে অবশ্য নাম গোপন করে মেয়েদের সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশকারীর ভীরু-সঙ্কোচ অনেকখানিই কেটে এসেছিল, তথাপি তাঁরা তখনও সম্পূর্ণরূপে সংশয়মুক্ত হ’তে পারেননি। তখনও বহুস্থলে অভিভাবকরা বা অভিভাবিকারা কন্যা বধূদের বাইরে নাম করা-করি পছন্দ করতেন না, (সমাজ তখনও ভূতপূর্ব মোগল-পাঠান প্রভাব অতিক্রম করতে পেরে ওঠেনি) আবার অপর পক্ষে লেখিকারা নিজেরাই বহুস্থলে, উপহসিত হ’বার বা সমালোচনার ভয়ে ভীতা হতেন। ‘পাছে লোকে কিছু বলে!’ এ না হলে আমরা আরও দু’জন শক্তিশালিনী লেখিকার পরিচয় পেতে পারতাম। তাঁদের একজন ৺ভূদেব মুখোপাধ্যায়ের কনিষ্ঠা কন্যা ৺বিজয়া দেবী। তিনি “কাউণ্ট অফ্‌ মণ্টিকৃষ্ট”, “আইভ্যানহো” “ব্রাইড অফ্‌ লামেরমূর”, “সেকেণ্ড ওয়াইফ” প্রভৃতি বহু ইংরাজী পুস্তকের অতি সুন্দর অনুবাদ করেছিলেন এবং তাঁর অকালে কাল-কবলিতা কন্যা অপর্ণা দেবীর বহু মৌলিক উপন্যাস লিখিত ছিল। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় পরবর্তী কালেও সেগুলি ছাপা হয়নি।

 ১৮৫৮ খৃঃ অব্দে সংবাদ-প্রভাকরে একজন বঙ্গমহিলার লেখা

O.P. 92—17