পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২০৭

আমরা পাই,—যাঁর দান শুধু সাহিত্যে নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে অমর হ’য়ে থাক্‌বে। মিসেস হারিয়েট ষ্টাউয়ের জন্ম ১৮১১ খৃষ্টাব্দে। বিবাহের পর এই আদর্শ গৃহিণী এবং আদর্শ মাতা গৃহকার্যের পর অবসর খুবই কম পেতেন, সেই বিরল অবসরে তিনি “ড্রেড্‌”, “পুরাণো সহরের লোক” প্রভৃতি বই লিখে যশোলাভ করেন। দাস জীবনের দুঃখ নিয়ে তিনি “টমকাকার কুটীর” বইখানি লিখেছিলেন, অন্তরের সমবেদনা দিয়ে। সেই একখানি বই ইংলণ্ডে এবং আমেরিকায় লক্ষ লক্ষ খণ্ড বিক্রি হয়, পৃথিবীর বহু ভাষায় অনূদিত হ’য়ে সর্বত্র সহৃদয় মানুষকে দাসপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতন ক’রে তোলে। এর দ্বারা যে আন্দোলন আরম্ভ হয় তার পরিসমাপ্তি হয় প্রায় সমস্ত পৃথিবী থেকে দাসত্ব প্রথার বিলোপে, বিভিন্ন দেশে কোটি কোটি চির-পরাধীন নির্যাতিত নরনারীর পরিত্রাণে। এত বড় পুণ্যকার্যের মূলে একজন মাত্র সহৃদয়া নারীর প্রেরণা ছিল, একথা ভাবলেও গভীর আনন্দ হয়।

 সে যুগের আমেরিকার মেয়েরা গল্পের চেয়ে কবিতাই বেশী লিখতেন, কিন্তু কবিতা লিখে স্থায়ী প্রতিষ্ঠা লাভ করতে কেউই বড় একটা পারেন নি। যে দু’চার জনের স্থান আজও ইংরেজী সাহিত্যে আছে, তাঁদের মধ্যে প্রধান ছিলেন অ্যালিস কেরীয়া। তাঁদের অল্প বয়সে মাতৃবিয়োগ হয়, বিমাতা এসে সব সময় সদয় ব্যবহার করেননি, দিনের বেলা কাজ ছিল, রাত্রে বাতি জ্বেলে কবিতা লেখা নিষেধ ছিল। ফেলে দেওয়া চর্বিতে ছেঁড়া কাপড়ের সল্‌তে জ্বালিয়ে তাঁরা প্রয়োজন মতো লেখা পড়া করতেন। অ্যালিসের যখন বত্রিশ বছর এবং কিরির আটাশ