পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

আবার বলছেন;—

‘‘জান না রে মন, পরম কারণ, শ্যামা সুধু মেয়েই নয়!
মেঘের বরণ করিয়া ধারণ, আবার কখন কখন পুরুষও হয়।”

 অবশ্য কোন কোন ছেলে মাকেই ছেলের সমস্ত ভাল-মন্দর জন্য দায়ী করেন নি; যেমন দাশরথি রায়, তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে নিচ্ছেন;—

“দোষ কারো নয় গো মা!
আমি স্বখাদ সলিলে ডুবে মরি গো শ্যামা!”

 অনুরূপ মীমাংসা অনেকেই অনেক চিন্তা-গবেষণার পর করে নিয়েছেন। দেওয়ান রঘুনাথ মায়ের “ভয়ানাং ভয়ং” এবং “গতিঃ প্রাণিনাং” এই দুই রূপেরই সমন্বয় সাধন করে নিয়ে বলছেন;—

“কে রণরঙ্গিণী, যোগিনী-সঙ্গিনী হয়ে উলঙ্গিনী নাচিছে সমরে,
ঝরে ইরশ্মদ নয়নের কোণে, ক্ষণপ্রভা খেলে দশন উপরে,
ভয়ঙ্করী মূর্ত্তি দেখে লাগে ভয়,  কিন্তু ভক্তে বিতরিছে বরাভয়,
অকিঞ্চনে কয়, সামান্য ত নয়, ব্রহ্মময়ী উদয় হয়েছেন সাকারে।”

 তা ভয়ই করুন আর যাই করুন যা করতে কোন ছেলেই মাকে ফেলে অন্যত্র হাত পাততে যান না। তা’ বাপ ভাই যিনি যতই থাকুন, সখা বন্ধু পতি যতই পাতান, চাওয়াটী কিন্তু সেই মায়েরই কাছে! “কুপুত্র যদ্যপি হয়, কুমাতা কখন নয়’ এ বচন যে বেদের বচনের সমসাময়িক বা তার চেয়েও আগের দিনের। তাই মাতৃনামের মোহমুগ্ধ এণ্টনি সাহেবটী পর্যন্ত লুব্ধচিত্তে মায়ের কাছেই ভিক্ষা চাইছেন;—