নারীর মোহময়ী রূপের পরাভব করে তার স্থিতিবিধায়িনী শক্তিরই ঊর্দ্ধতন তিনি সর্বত্র করেছেন। যে কথা সৃষ্টিতত্ত্বের মূল কথা, আদি সত্য, মহাকবির দৃষ্টিতে তা অজ্ঞাত থাকে নি। যে ‘প্রিয়া’ আজ প্রগতিসাহিত্যে নরের নারী-বেশী প্রতীকমূর্তি, কমরেড অথচ লোলুপকামনার বস্তু, তারই বিষয়ে কবি সসম্ভ্রমে নিবেদন জানাচ্ছেন;—
“শতবার ধিক আজি আমারে, সুন্দরি,
তোমারে হেরিতে চাহি এত ক্ষুদ্র করি।
তোমার মহিমা জ্যোতি তব মূর্তি হতে,
আমার অন্তরে পড়ি ছড়ায় জগতে,
যখন তোমার প’রে পড়েনি নয়ন,
জগৎ লক্ষ্মীর দেখা পাই নি তখন।”
একস্থানে তিনি নারী-বন্দনায় গাইলেন;—
“পবিত্র তুমি, নির্মল তুমি, তুমি দেবী তুমি সতী।”
রবীন্দ্রনাথের “নারী পরিচিতি” কোন প্রবন্ধের ক্ষুদ্র এক অংশের বর্ণনীয় বিষয় হতেই পারে না, উহা বহু প্রবন্ধের বিষয়বস্তু। সে অসাধ্যসাধনে ব্রতী হব না। ‘প্রকৃতির প্রতিশোধে’’র সন্ন্যাসীর মর্মভেদী শেষ বিলাপটুকু, সেই মায়াময়ী পরিত্যক্তা অনাথা মেয়েটির প্রাণশূন্য দেহটি বুকে নিয়ে ব্যর্থ ডাকাডাকি;—“বাছা, বাছা, কোথা গেলি? কি করিলি রে?” এবং ত্রিপুরাধিপতি গোবিন্দমাণিক্যের নগণ্য একজন প্রজা-কন্যার মৃত্যুশয্যাপার্শ্বে সেই কঠিন স্বীকৃতি “মা! এ রক্তস্রোত আমি নিবারণ করিব।” দস্যুদলপতি রত্নাকরের বনবালিকাকে অভয় প্রদান;—