পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৩৯১

“মরিলে তুলিয়ে রেখ তমালের ডালে”র মতই একটী করুণ আর্জি সোনা-মাকে করছে;—

“এই কাঁথাখানি বিছাইয়া দিও আমার কবর ’পরে
ভোরের শিশির কাঁদিয়া কাঁদিয়া এর বুকে যাবে ঝরে।
সে যদি আবার ফিরে আসে কভু, তার নয়নের জল
জানি জানি মোর কবরের মাটি ভিজাইবে অবিরল।”

তার ‘কবর’ কবিতাটি রক্তের রংয়ে আঁকা, এর সঙ্গে তুলনায় মনে পড়ে মিসেস হেমান্সের সেই বিখ্যাত কবিতা;—

“দে গ্রু ইন্ বিউটি সাইড বাই সাইড, দে ফিল্ড্‌ ওয়ান হোম উইথ গ্লি,
দেয়ার গ্রেভস্ আর সিভারড্‌ ফার এণ্ড ওয়াইড্‌ বাই মাউণ্টেন রিভার এণ্ড দি সি।”

 রবীন্দ্রনাথের গদ্যসাহিত্যও সব দিক দিয়ে পদ্যসাহিত্যের মতই বিশাল, বরঞ্চ পরিধির হিসাবে বিশালতর। আমরা এখানে তাঁর গল্প উপন্যাস নাট্যসাহিত্যের মধ্যবর্তিনী নারীদেরই একটা রেখাচিত্র মাত্র দিয়ে যাচ্ছি। পূর্বেই বলেছি এ-ছাড়া তাঁর সাহিত্যিক চরিত্রের বিস্তৃত আলোচনা করবার মত স্থান বা শক্তি আমাদের নেই। রবীন্দ্রনাথের এক একটি ছোট গল্প কাব্যগাথার মতই চমৎকারিত্বপূর্ণ এবং কবিতার মতই সুখপাঠ্য। “কাবুলীওয়ালা” গল্পে খুকী মিনি শিশু-চিত্রের আর একটী অভিনব দান, “ছুটি”র ফটিকচাঁদ, “অসমাপ্ত”র চঞ্চলা মেয়ে মৃন্ময়ী, “পোষ্টমাষ্টারের রতনের ছোট মনের বিশ্লেষণ তদানীন্তন বঙ্গসাহিত্যে নূতন আলোকসম্পাত করেছিল। “মেঘরৌদ্র’’-এর বদ্রাওনের নবাবপুত্রীর প্রণয়কাহিনী যেমনই সকরুণ তেমনই