পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৯৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

ডোবেনি। অতি নমনীয়া ও কমনীয়া “আশা”র কাছে ক্ষমা পেয়ে সে তার দুর্বার চিত্তবিভ্রমের প্রায়শ্চিত্তে অনুতাপতপ্ত জীবন উৎসর্গিত করে দিয়ে পাঠকসমাজের কাছেও ক্ষমার্হ হয়েছিল।—ভুল করা মানব-ধর্ম!

 “অন্নপূর্ণা” “গোরা”র আনন্দময়ীরই সগোত্রা, ঘটনাচক্রের সংঘাতে পড়ে আনন্দময়ী উদারতর হয়ে উঠতে অবকাশ পেয়েছিলেন। “গোরা”র ললিতা আধুনিক সাহিত্যরথীদের আদর্শ একরোখা মেয়ে, সে ভাল কি মন্দ জানি না; যেমন যুগধর্মে জন্মাচ্ছে তারই একটি আলোকচিত্র। সুচরিতা মেয়েটি পুরাণো বাংলার, ভাগ্যচক্রের আবর্তনে যখন যেখানে গিয়ে পড়ে, সামলে নেয়।

 “চতুরঙ্গে”র “দামিনী” “শেষের কবিতা’’র লাবণ্যর কাঠামো একই জাতের; দারুণ দুস্প্রবেশ্য!

 “দুই বোন” এ-দু’খানি মডেল, একমেটে করে ছেড়ে দেওয়া, দোমেটে করা হয়নি, নেহাৎ উপরোধে লিখে দিতে হয়েছিল হয়ত। ‘মালঞ্চ”-এ সঙ্কীর্ণ নারীচিত্রের প্রতীক। বড় ভাল লাগে আমাদের “গোড়ায় গলদ”-এর ইন্দুমতীকে, হাসিখুসীভরা, সঞ্চারিণী দীপশিখার মত, ঝলকে ওঠা দীপালোকের মত মন ধাঁধিয়ে দেওয়া চমৎকার মেয়ে। “গয়লার গাই”কে চাকর বানিয়ে যে নাকালটা করেছিল, ইদানীংকার হাসতে ভুলে যাওয়া বাঙ্গালীর ঘরে আজও সে একটা সত্যকার প্রাণ খুলে হাসবার উপাদান দিয়ে রেখেছে। এমন হাস্য-সরস মধুর চরিত্র আমরা বাস্তবেও কদাচিৎ দেখেছি এবং তারা আজ তাদের সেই ব্যঙ্গ রঙ্গ-হাস্যস্রোত সঙ্গে নিয়ে চলে গেছে, “ইন্দু”র মত আমাদের হাঁপ ছাড়বার