পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৪২১

 একজন সাহিত্যিকের মতে “মহানিশা”র ধীরার ত্যাগমহিমায় মাথানত হয়, কিন্তু পতিতপাবনীর ভাষায় বল্‌তে ‘কৌঁসুলি মেয়ে’ অপর্ণা পাঠক পাঠিকার হৃদয় হরণ করে বেশী; তার মাছের মুড়োর ঝোল এবং চালতার গুড় অম্বল রসনায় জল আনে, দুর্মুখ দাদামহাশয়ের মুখ ততোধিক মুখরতায় বন্ধ করে দেওয়ায় মন সায় দেয় এবং যখন বিপদের বন্ধু বৃদ্ধ বিহারীকে সে নিজেকে সমর্পণ করে কথঞ্চিৎ মাতৃঋণ শোধ করবার জন্য বিশ্বাসঘাতক প্রিয়তম নির্মলকে তীব্র ভর্ৎসনা করে ফিরিয়ে দেয়, তখন হৃদয় তাকে গভীর শ্রদ্ধায় ধন্য ধন্য বলে ওঠে।”

 ‘‘পথহারা” এবং “চক্র” উপন্যাসের পূর্বে দেশের তদানীন্তন রাজনীতিকে উপন্যাস সাহিত্যের বিষয়বস্তু বোধ হয় কেহই করেন নি, অথবা অতটা খোলাখুলিভাবে করতে ভরসা করেননি, আজ মৃত বাঘকে পদাঘাত করবার সাহসকে অন্ততঃ দুঃসাহস বলা চলে না। “বিবর্তনে”র পল্লীসংস্কার চিত্র আজ বাংলা সাহিত্যে প্রচুরতরভাবেই প্রভাব বিস্তার করেছে।

 বহু সমালোচকের মতে বঙ্কিমযুগের পর উপন্যাসসাহিত্যে যখন ভাঁটা পড়ে গেল, যখন একমাত্র সব্যসাচী রবীন্দ্রনাথ ছাড়া অন্য সাহিত্যিকেরা বিদেশী উপন্যাসের অনুবাদ এবং ছোট গল্প লেখা নিয়েই বিভোর ছিলেন, ঠিক সেই যুগে (১৯০৯-১০) “প্রবাসী”তে প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের “নবীন সন্ন্যাসী” এবং “ভারতী”তে অনুরূপা দেবীর “পোষ্যপুত্র” আত্মপ্রকাশ করে বাংলাসাহিত্যকে উপন্যাসের জোয়ারে প্লাবিত হ’তে সুযোগ দিয়েছিল। সেই সঙ্গেই আমোদিনী ঘোষ, নিরুপমা দেবী,