পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
সাহিত্য-চিন্তা

 অমরেন্দ্র—“তারপর সেই ছেলেটির প্রকৃতি পরিবর্তনের জন্য নানা উপায় অবলম্বন করা হইল। মনুষ্যের মত তাহার খাদ্যের বন্দোবস্ত করিয়া দেওয়া হইল। অর্থাৎ ভাত এবং মাংস রাঁধিয়া দেওয়া হইত। কিন্তু সে খাদ্য উহার সহ্য হইল না, শীঘ্রই সে পেটের পীড়ায় মারা গেল।”

 অমরেন্দ্র বলিতে লাগিলেন—“শোন প্রফুল্ল! মনুষ্য এইপ্রকার বাঘের প্রকৃতি কোথা হইতে পাইল? ইহার একমাত্র উত্তর—মাতৃস্তন্য ও শিক্ষা হইতে। মন্দদিকে যেমন, ভালদিকেও সেইপ্রকার শিক্ষিত হইতে পারে। মাতৃস্তন্যপানের সঙ্গে সঙ্গে যেশিক্ষা মাতার নিকট হইতে মানবগণ লাভ করিয়া থাকে, তাহার শক্তি অসামান্য। আমাদের জননীগণ যদি ভক্তিতে উদ্বোধিতা হইয়া উঠেন, আমরা সে মহাউদ্বোধন মাতার নিকট হইতে লাভ করিব। আমাদের মাতৃগণের হৃদয় যদি প্রেম ভক্তিতে পূর্ণ হয়, তবে আমরা কেন না প্রেমিক ও ভক্ত হইব? ভারতের অর্দ্ধেক এই নারী-শক্তি। নারী-শক্তি চেতুনা লাভ করুক, তবেই দেশের প্রকৃত উন্নতি সাধিত হইবে। মাতৃক্রোড়ই জগতের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষালয়।”[১]


  1. লেখিকার “অমরেন্দ্র” নামক উপন্যাস হইতে।