পাতা:সাহিত্য-রত্নাবলী - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৈসৰ্গিক ধৰ্ম্ম । তবে অার এক দিক দিয়াও দেখিতেছি, মানবপ্রকৃতিতে এমন কিছু আছে, যাহা ধৰ্ম্মের জয় দেখিতে চায়, ধৰ্ম্মের জয় হইবে ইহা শুনিতেও ভালবাসে, ভাবিতেও ভালবাসে, এরূপ কথা যে সাহস করিয়া বলে ও সেই বিশ্বাসে আপনাকে অৰ্পণ করিতে পারে, তাহার চরণে দাস হইতেও ভালবাসে । ঈশ্বর মানব প্ৰকৃতিকে ধৰ্ম্মের অনুগত করিয়াছেন । চীন দেশের একজন রাজা একবার মহামতি কংফুচকে জিজ্ঞাসা করিলেন,-“হে বিজ্ঞবর রাজ্য শাসন ও রাজ্য রক্ষার জন্য কি সময়ে সময়ে দুবৃত্ত লোকদিগকে হত্যা করা আবশ্যক হয় না ?” কংফুচ উত্তর করিলেন-“হে রাজন, আপনি হত্যার বিষয়ে চিন্তা করিবেন কেন ? আপনি ন্যায় ও ধৰ্ম্ম অনুসারে রাজ্য শাসন করুন, দেখিবেন বায়ুর অগ্ৰে শস্যক্ষেত্র যেমন স্বভাবতঃ নত হয়, তেমনি আপনার অগ্ৰে প্ৰজাকুল স্বভাবতঃ নত হইবে।” এ কথার অর্থও এই, মানব-প্ৰকৃতি স্বভাবতঃ ধৰ্ম্মের অনুগত, সকল জ্ঞানী মানুষ ইহা অনুভব-কারিয়াছেন, সকল চিন্তাশীল ব্যক্তি ইহা দেখিয়াছেন, সকল শুরুই এ বিষয়ে উপদেশ দিয়াছেন । সুপ্ৰসিদ্ধ দার্শনিক পণ্ডিত ইমানুয়েল ক্যাণ্ট এক স্থানে বলিয়াছেন-“দুইটি বিষয় আমাকে গভীর বিস্ময়ে পূর্ণ করে, নক্ষত্ৰখচিত আকাশ ও মানবের হৃদয়নিহিত ধৰ্ম্মবুদ্ধি।” ঠিক! ঠিকৃ! মানবের হৃদয়নিহিত এই ধৰ্ম্মানুরাগ আকাশের স্থায় অপরিসীম। মানবপ্রকৃতি ধৰ্ম্মের অনুগত ও ধৰ্ম্মের জয় অবশ্যম্ভাৰী, ইহার অর্থ কি ? ইহার অর্থ, এই ভৌতিক প্ৰকৃতির মধ্যে যেমন এমন কিছু আছে, যাহার গুণে প্রস্তর খণ্ডকে উৰ্দ্ধে উৎক্ষিপ্ত করিলেই ভূপৃষ্ঠে পড়িবেই পড়িবে ইহা যেমন বলা যায়, তেমনি মানব প্রকৃতির মধ্যেও এমন কিছু নিহিত আছে, যাহাতে ধৰ্ম্মকে শ্রেষ্ঠ স্থান দিবেই দিবে, ধৰ্ম্মের জয় হইবেই হইবে। ইহার অর্থ কি এই নয় যে, মানবের জীবন এক ধৰ্ম্মৰহু শক্তি ৰা। পুরুষের হস্তে ? এই জন্যই উপনিষৎকার ঋষিগণ বলিয়াছেন,-“স