পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘স্বর্ণলতা” রচনা তারকনাথ যখন মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র, সেই সময়ে বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দুর্গেশনন্দিনী’ প্রকাশিত হয় (ইং ১৮৬৫ ) ৷ ‘দুর্গেশনন্দিনী’ রোমান্স। বাস্তবপ্রিয় তারকনাথ রোমান্স পাঠ করিয়া তৃপ্তিলাভ করিতে পারেন নাই । তিনি লিখিয়াছেন – “গ্রন্থকারের লোকের মনের কথা টের পান এবং ইচ্ছা হইলে সকল স্থানেই গমনাগমন করিতে পারেন । নহিলে মুন্দর বকুলতলায় বসিয়া কি ভাবিতেছিলেন, ভারতচন্দ্র রায় তাহা কি প্রকারে জানিতে পারিলেন ; এবং মাইকেলই বা কি প্রকারে পরলোকের বৃত্তান্ত অবগত হইলেন ? এবং তদপেক্ষাও দুর্গম যে মুসলমানের অন্তঃপুর, বঙ্কিম বাবু কি প্রকারে তথায় উপস্থিত হইয়া ওসমান ও ও আয়েসার কথোপকথন শুনিতে পাইলেন ? এ ভিন্ন গ্রন্থকারদিগের আরও একটি শক্তি আছে, অর্থাৎ ইচ্ছা হইলেই অসম্ভবকে সম্ভব করিতে পারেন । এটি বড় সাধারণ শক্তি নহে । এ শক্তি না থাকিলে অনেক গ্রন্থকার মারা যাইতেন । বিষ্ণুশৰ্ম্ম তো একেবারে বোবা হইতেন । কিন্তু এই শক্তিটি ছিল বলিয়াই লঘুপতনক দ্যায়শাস্ত্রের বিচার করিতেছে এবং চিত্রগ্রীব অবোধ কপোতদিগকে উপদেশ দিতেছে। এই শক্তির প্রভাবেই বঙ্কিম বাৰু আড়াই শত বৎসর পূৰ্ব্বের এক যবনতনয়ার মুখ হইতে অধুনাতন ইউরোপীয় সুসভ্য জাতীয় কামিনীগণের ভাষা অবলীলাক্রমে নির্গত করাইয়াছেন।”—“স্বর্ণলতা, ২য় পরিচ্ছেদ । বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করিয়া বাঙালী সমাজের চিত্র অঙ্কনের সঙ্কল্প এই সময়ে তারকনাথের মনে উদিত হয়। এই সঙ্কল্প তিনি অদূর ভবিষ্যতে কাৰ্য্যে পরিণত করিয়াছিলেন।