পাতা:সাহিত্য-সাধক-চরিতমালা পঞ্চম খণ্ড.pdf/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

38 মানকুমারী বস্থ কাজ খুব গোপনে করিয়াছিলাম। এখন আমার মনে হয়, তখন আমার যে রকম লজ্জা সঙ্কোচাদি ছিল, তাহাতে যদি আমার মন সেরূপ অপ্রকৃতিস্থ না হইত, তবে আমি ‘প্রিয় প্রসঙ্গ’ ছাপাইতে পারিতাম না । যাহা হউক, ‘প্রিয় প্রসঙ্গ’ মুদ্রিত ও প্রকাশিত হইলে আমার আত্মগোপনের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও অনেকে বুঝিতে পারিলেন আমিই উহার রচয়িত্রী। তখন অনেক হিংসা, দ্বেষ, লাঞ্ছনা ও গঞ্জনা আমাকে সহিতে হইয়াছিল । আমার এত অদ্ভুদরের ‘প্রিয় প্রসঙ্গ’ ও সাধারণের কাছে আদৃত হয় নাই। বিজ্ঞাপনাদি অভাবে অনেকে উহার অস্তিত্ব পর্য্যন্ত অনেক দিন জানিতে পারিলেন না।••• যখন ক্রমশ: দিন যাইতে লাগিল, তখন কেবল গুরুজনের সেবা, শিশুপালন অথবা সংসারের কাজকৰ্ম্ম করিয়া আমার হৃদয়ের তৃপ্তি হইল না । বাকী জীবনটি কি করিয়া কাটাইব, তাহাই আমার চিন্তার বিষয় হইল। ভগবান এ অধম সস্তানকে যে বিদ্যানুরাগ ও একটু কবিত্বশক্তি দিয়াছিলেন, তাহাই অনুশীলন করিতে প্রবৃত্ত হইলাম। ক্রমে বুঝিলাম, জগতে থাকিতে হইলে বিশ্ব-বিধাতার কাজে আত্মোৎসর্গ করা উচিত । বলা বাহুল্য, তখন ভগবানের স্নেহে অবিশ্বাস বা তাহার উপরে অভিমান দূর হইয়াছিল। আমার অদৃষ্টকল আমি পাইলাম। ইহাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস হইল। আমি মনে করিলাম, সধবা মহিলাদিগের যেমন সংসারের কাজ করা কৰ্ত্তব্য, বিধবা মহিলাদিগের সেইরূপ সমাজের কাজ করা কৰ্ত্তব্য । ইহা যখন আমার “সত্য” বলিয়া ধারণা হইল, তখন সেই অকিঞ্চিৎকর ক্ষমতা দ্বারা সমাজের সেবা করিতে প্রস্তুত হইতে লাগিলাম। এই সময় আমি পুরাতন বঙ্গদর্শন, আৰ্য্যদর্শন, কবিবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা, বিহারিলাল চক্রবর্তী মহাশয়ের কবিতা, এবং সাহিত্যগুরু বঙ্কিমচন্দ্রের