পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (অষ্টম ভাগ).pdf/২৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

lo/o সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা t কালীপ্রসন্ন বাবুৱ প্ৰবন্ধ পঠিত হইলে, সভাপতি মহাশয় বলিলেন, কালীপ্রসন্ন বাবুর প্ৰবন্ধ অতিশয় হৃদয়গ্ৰাহী হইয়াছে । ইহা তাহার প্রায়-প্ৰকাশিত ইতিহাসের একটি অধ্যায় । শীঘ্রই ঐ ইতিহাস প্ৰকাশিত হইবে । আমরা আদ্যকার প্রবন্ধ হইতেই বুঝিতে পারিতেছি, ঐ ইতিহাস কিরূপ উৎকৃষ্ট হইবে এবং উহার উপযুক্ত বিষয়-সংগ্ৰহে কালীপ্রসন্ন বাবু কিরূপ অনুসন্ধান, যত্ন ও পরিশ্রম করিয়াছেন । আদ্যকার প্রবন্ধ শুনিয়া বুঝা গেল, মুসলমানরাজত্ব কেবলই যে অত্যাচার ও বিলাসিতার রাজত্ব ছিল তাহা নহে, সেকালেও প্ৰজার সুখ। স্বাচ্ছন্দ্যের এবং রাজ্যের অনেক সুব্যবস্থা ছিল ; তবে ইউরোপীয় প্ৰথা যতটা মার্জিত নিয়মে গঠিত, তাহা ততটা নহে । আকবরের উদারতার রাজ্যে প্ৰজার সুখস্বাচ্ছন্দ্য খুবই বেশী ছিল, কিন্তু আরঙ্গজেবের সঙ্কীর্ণতার রাজত্বে তাহা নষ্ট হইয়া গিয়াছিল । কোরাণের ধৰ্ম্ম মানাইবার জন্য অনেক মুসলমান শাসন কৰ্ত্তী বন-প্ৰয়োগ করিতেন, ইংরাজ-রাজত্বে সে ভয় নাই । ধৰ্ম্মে হস্তক্ষেপ করায় শিখ ও মহারাষ্ট্র অভু্যদয় হইয়াছিল । খৃষ্টান রাজত্বের সুত্রপাতে যে বলপ্ৰকাশ হয় নাই এমন নহে ; পৰ্ত্তগীজেরা বলপূর্বক খৃষ্টান করিত, তাহার প্রমাণ ইতিহাসে আছে। ধৰ্ম্মে হস্তক্ষেপ করিব না, এই প্ৰতিজ্ঞাই ইংরাজ-রাজত্বকে এতটা দৃঢ় ও এতটা শান্তিময় করিয়া তুলিয়াছে । যাহা হউক, আজ আমরা এই প্ৰবন্ধে মুসলমান রাজত্বের রীতিনীতি, প্রভাব, উন্নতি, অবনতি, দেশের অবস্থা ইত্যাদির বিবরণ শুনিলাম। এ সকল বিষয়ে আমাদের আজ অনেক জ্ঞানলাভ হইল । প্ৰবন্ধ শুনিয়া আজ আমরা সুখী হইয়াছি । তৎপরে ঋতেন্দ্র বাবু তাহার প্রবন্ধ পড়িয়া শুনাইলেন। শ্ৰীযুক্ত রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী মহাশয় বলিলেন, শিখদিগের ধৰ্ম্মগ্রন্থ এবং গুৰু নানকের সম্বন্ধে আজ অনেক জানা গেল । গুরু নানক জগন্নাথে আসিয়াছিলেন ,' তাহা জানতাম না । সময়ের কথা ধরিয়া বিচার করিলে যেন মনে হয় যে, প্ৰবন্ধকার যে সময়ে গুরু নানককে জগন্নাথ তীর্থে উপস্থিত করিতেছেন, ইতিহাস অনুসারে সে সময়ে চৈতন্যদেব ও জগন্নাথে উপস্থিত ছিলেন, অথচ এরূপ একজন ঈশ্বর-প্রেমিক জগন্নাথে আছেন বা আসিলেন জানিয়া, উভয়ের দেখা শুনা হইল না, ইহা একটু আশ্চৰ্য্য-জনক বলিয়া বোধ হয় । প্ৰবন্ধকারকে এজন্য অনুরোধ যে, এ সম্বন্ধে তিনি আর একটু অনুসন্ধান করিয়া উভয়ের জগন্নাথে উপস্থিতির কালাকাল সম্বন্ধে । বিশেষ তথ্য আমাদের জানাইবেন । র্তাহার প্রবন্ধ অতি সুন্দর। র্তাহার শিখ গ্রন্থের আবৃত্তি ও ব্যাখ্যাকৌশলও প্রশংসনীয়। তৎপরে সহকারী সম্পাদক শ্ৰীযুক্ত বোমকেশ মুস্তফী পরিষদের সভ্য ৬% যোগেশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ও বালেশ্বরের কুমার সত্যেন্দ্রনাথ দেবের অকাল-মৃত্যুতে শোক প্ৰকাশ করিয়া নিম্নলিখিত প্ৰস্তাব উপস্থিত করিলেন “পরিষদের উৎসাদী সভ্য যোগেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের এবং কুমার সত্যেন্দ্রনাথ দেব মহাশয়ের অকাল-মৃত্যু হওয়ায় পরিষৎ বিশেষ দুঃখিত আছেন এবং তঁহাদের শোক-সন্তপ্ত পরিবারবর্গকে আন্তরিক সহানুভূতি জানাইতেছেন।” এই প্ৰস্তাব শ্ৰীযুক্ত রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী মহাশয় কর্তৃক সমৰ্থিত হইল। নগেন্দ্র