পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (ত্রয়োদশ ভাগ).pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नन > ७४७ 1 পুড়োজাতির বিবরণ S8 বলা বাহুল্য যে, পাণ্ডুয়ানগর যে স্থানেই অবস্থিত হউক না কেন, পুড়োজাতি যে তাহার আদিম অধিবাসী, ইহা সৰ্ব্ববাদিসন্মত। তবে পুড়োগণের প্রাচীনদিগের নিকট শুনিয়াছি যে, তাহারা বর্তমান পাবনা জেলাকেই পৌণ্ডবৰ্দ্ধন বলিয়া বিশ্বাস করে। আবার এই জাতির সম্প্রদায়বিশেষ কিন্তু রাঢ়দেশের মধ্যেই পৌণ্ডবৰ্দ্ধনের অবস্থিতি নির্দেশ করিয়া থাকে। প্ৰমাণ স্বরূপ, তাহদের কথাবাৰ্ত্তা ও কথকটা আচার-ব্যাবহারকে রাঢ়দেশীয় ভাবাপন্ন cथों शश् ि। একদিন একটি অশীতিপর বৃদ্ধ পুড়ে তাহদের জাতীয় উৎপত্তি সম্বন্ধে আমাকে এইরূপ একটী গল্প বলিয়াছিল যে, গঙ্গাপার হইয়া আমাদের আগমনকালীন পবিত্ৰ গঙ্গাজলের অভাব জন্য আমাদের পূর্বপুরুষগণ একটি তাম্রপাত্রে গঙ্গোব্দকু রক্ষা করিয়া আনিয়াছিলেন-অস্থাপিও আমাদের জাতীয় কি ক্ষুদ্র, কি বৃহৎ প্রত্যেক গৃহস্থেরই গৃহে গঙ্গাজল আতি যত্নের সহিত তাম্রপাত্রে রক্ষিত আছে।” যদি কেহ কোন পুড়ো গৃহে তাম্রপাত্ৰস্থ গঙ্গাজল না দেখাইতে পারে, তবে তাহার অন্ন অপারে। আহার করে না । ইহাতে প্ৰকাশ যে, আমাদের জাতিতে আতিথ্য গৃহস্থের একটী নিত্য অনুষ্ঠেয় কাৰ্য্য। যদি কোন গৃহস্থের বাটীতে অতিথি উপস্থিত হইয়া গঙ্গাজল চাহিয়া না পায়, তবে সে ক্ষুৎ পিপাসাতুর তইলে ও তাহার বাড়ীতে জলস্পর্শ করে না। বৃদ্ধার এই কথায় ঘটনা সত্য কি না। জানিবার জন্য আমি প্ৰায় ১২; ১৩ ঘর গৃহস্থের গৃহ অনুসন্ধানে গঙ্গাজল পাইয়াছিলাম এবং পুড়ো রমণীগণ উহা দেখাইবার সময় প্ৰত্যেকেই তাম পাত্রে আমাকে গঙ্গাজল দেখাইয়াছিল। যদি পুড়োজাতির এই গঙ্গাজল রক্ষা-পদ্ধতি তাহাদের প্রকৃতই পূৰ্ব্বপুরুষগণের আচরিত অনুষ্ঠান হয়, তবে একথা স্বীকাৰ্য্য যে, তাহারা প্রকৃতই রাঢ়ীয়। কিন্তু পুড়ো জাতির মধ্যে রাঢ়ীয় বা বারেন্দ্ৰ বলিয়া কোন সম্প্রদাস নাই ; সাধারণতঃ তাহারা তিন শ্রেণীতে বিভক্ত, যথা ;-কৃষ্ণপক্ষে, মধ্যমে, আর বাউরে । এই তিন সম্প্রদােয়ই একই প্ৰাচীন পৌণ্ডবংশসস্তৃত। অন্যান্য হিন্দুগণের ন্যায়। ইহাদের সংখ্যাধিক্য হইলে অবস্থানের গতি অনুসারে ইহার পৌণ্ডরিক যাজক ব্ৰাহ্মণগণের উদ্যোগে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত হয় । যখন পুরাতন পৌণ্ডবৰ্দ্ধন ছাড়িয়া এই জাতি উপনিবেশ সংস্থাপন করিতে প্ৰবৃত্ত হয়, তখন একজন ক্ষমতাশালী অভিজ্ঞ পুড়ো কায়স্থগণের ন্যায় নাকি একটি “একজাই” অর্থাৎ জাতি-সন্মিলনী করিয়াছিল। ঐ ব্যাক্তির নাম বিদ্যাধর । ইহার অর্থ বলে উচ্চ শ্রেণীর ব্ৰাহ্মণগণ এই নিম্ন বর্ণের যাজন কাৰ্য্য করিয়া পতিত হন। অধুনা এই পতিত ব্ৰাহ্মণ ংশীয়গণই পুড়োজাতির পুরোহিত। বিদ্যাধরের একজাইতে যে সকল ব্ৰাহ্মণ পাতিত্যদোষে দুষ্ট হইয়াছিলেন। তঁহাদের বংশগত পূৰ্ব্ব উপাধি অস্থাপিও অক্ষুন্ন আছে। উদাহরণ, স্বরূপ,-যশোহর ঘোড়ামারার মুখ্যোপাধ্যায় উপাধিধারী পুণ্ডরিক পুরোহিতগণের নাম উল্লেখ্যযোগ্য। এই বিদ্যাধরের বংশীয় পুড়োগণ অদ্যাপিও পুণ্ডরিক সমাজমধ্যে সর্বশ্ৰেষ্ঠ । ইঠাদের বংশীয় পুড়োগণ এখনো পাবনাজেলার স্থানে স্থানে উচ্চবর্ণের হিন্দুসাধারণের ন্যায় সাপ সারিক ।