जन्म ७७७२ } বাঙ্গাল কারক প্রকরণ Sዒ এই প্রশ্নের উত্তর দিবার পূর্বে একবার সম্প্রদানকারক ঘটিত বিতণ্ডাটা তোলা আবশ্যক । সংস্কুতে কারক অর্থগত। ষে কৰ্ত্তা, সে কৰ্ত্তাই থাকিবে ; “রামো বনং জগাম” এস্থলে প্ৰথমাস্ত রাম কৰ্ত্ত, “রামেণ ৰনং গতম এস্থলে তৃতীয়ান্ত রামও কর্তা । বিভক্তিচিহ্ন দেখিয়া কারক নির্ণয় হইল না। আবার “নাগ্নিস্তৃপ্যতি কাষ্ঠানাম’ (অগ্নি কাষ্ঠে তৃপ্ত হন না ) এস্থলে কাষ্ঠ তৃপ্ত্যর্থধাতুর যোগে ষষ্ঠ্যন্ত হইলেও করণ কারক । “দ্বিন্দিবসন্ত ভুঙক্তে’-দিনে দুইবার থায়-এস্থলে দিবস ষষ্ঠ্যন্ত হইলেও অধিকরণ। কাজেই সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়মে বিভক্তি দেখিয়া কারক নিরূপণ হইবে না, অর্থ দেখিতে হইবে। এখন দরিদ্রকে ধন দাও” এই বাক্যে দরিদ্রের বিভক্তি কৰ্ম্মের বিভক্তির সহিত অভিন্ন হইলেও দরিদ্র যখন দানপত্র, তখন সংস্কৃত ব্যাকরণের পদ্ধতিতে চলিলে তাহার সম্প্রদানত্ব যাইবে কিরূপে ? ক্রিয়ার সাধক যদি সৰ্ব্বত্ৰই করণ হয়, দানক্রিয়ার পাত্র তখন সৰ্ব্বত্র সম্প্রদানই হইবে। কাজেই একপক্ষের বক্তব্য, সংস্কৃত ব্যাকরণের পন্থা অবলম্বন করিতে হইলে সম্প্রদানকে কেবল ৰিভক্তিমাত্ৰ দেখিয়া কৰ্ম্ম বলা চলিবে না । বিভক্তি দেখিয়া কারক স্থির করিতে হইলে, “সাপে কাটে, বাঘে খায়’ এ সকল স্থলে সাপকে ও বাঘকে কৰ্ত্ত না বলিয়া অধিকরণ বা ঐ রূপ কিছু ধালিতে হয়। পূৰ্বপক্ষের উত্তর এইরূপ দেওয়া চলিতে পারে। সংস্কৃত ব্যাকরণে সাধারণ বিধি অনুসারে দানপত্রের জন্য একটা নির্দিষ্ট বিভক্তি রহিয়াছে—চতুর্থী বিভক্তি। সাধারণতঃ কৰ্ম্মে দ্বিতীয় ও সম্প্রদানে চতুর্থ বিভক্তি নির্দিষ্ট । এই নির্দিষ্ট লক্ষণ আছে বলিয়াই, কৰ্ম্ম হইতে ভিন্ন একটা সম্প্রদান কারক বৈয়াকরণের খাড়া করিয়াছেন ; নতুবা কেবল দানক্রিয়ার পাত্ৰ বলিয়াই উহাকে একটা স্বতন্ত্র কারক করা হয় নাই। তাহা হইলে রবীন্দ্ৰবাবুর ভাষায় ভোজনক্রিয়ার পাত্রকে সম্ভোজনকারক, তাড়ন্ক্রিয়ার পাত্রকে সন্তাড়নকারক, এইরূপে ক্রিয়ামাত্রেরই জন্য এক একটা বিশেষ কারক স্থির করিতে হইত। ফলে ক্রিয়া যাহাকে আক্রমণ করিয়া রহে, তাহার নাম কৰ্ম্ম ; উহার নির্দিষ্ট বিভক্তি দ্বিতীয়া ; ক্রিয়ামাত্রেরই পক্ষে এই বিধি। কেবল দানক্রিয়ার বেলায় ভিন্ন বিভক্তি চলিত থাকায় উহার জন্য একটা স্বতন্ত্র কারক করা হইয়াছে মাত্ৰ। নতুবা দানক্রিয়া পরম পুণ্য হইলেও বৈয়াকরণের নিকট উহাকে অন্য সকল ক্রিয়া হইতে স্বাতন্ত্র্য দিবার কোন প্ৰয়োজন ছিল না । বাঙ্গলায় যখন দানক্রিয়ার পাত্রের জন্য কোন স্বতন্ত্র লক্ষণ নাই, তখন উহাকে অন্যান্য ক্রিয়ার সমতুল্য মনে করাই যুক্তিসঙ্গত। সেই জন্য দানক্রিয় যে ব্যক্তিকে সবেগে আক্রমণ করিয়াছে, তাহাকে দানক্রিয়ার কৰ্ম্ম বলিলে এমন ক্ষতি কি হইবে ? এই যুক্তিতে যাহারা সন্তুষ্ট না হইবেন, তঁহাদের জন্য সংস্কৃতব্যাকরণের দোহাই দিয়া অন্ত একটা যুক্তি দেখান যাইতে পারে। সংস্কৃতব্যাকরণের কারকগুলি যে কেবল অর্থ দেখিয়াই সৰ্ব্বত্র স্থির হয় এমন নহে। একটু জোর করিয়া নানা অর্থে একই কারক ঘটান হয় । যেমন অপাদানের মূল অর্থ যাহা হইতে বিশ্লেষণ ঘটে বা সরান যায়। যেমন “অৰ্থাৎ পতিতঃ” (ܝܪ
পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (দ্বাদশ ভাগ).pdf/১০১
অবয়ব