পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (দ্বাদশ ভাগ).pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন ১৩১২ ] নিরক্ষর কবি ও গ্রাম্যকবিতা Q8 এই গীত শেষ হইতে না হইতে এই মহকুমার একটি উদার চরিত্র সুরসিক মোক্তার অমনি তাকে একখানা অৰ্দ্ধ ছিন্ন শালের চাদর দান করিয়াছিলেন। জয়চাঁদ তখন চান্দরটি মাথায় দিয়া আবার মূল গাজি গীত গাইতে গাইতে ঘুরিতে লাগিল। আর একটি অৰ্দ্ধমূল গায়ক বা গাজি গীতের “খেড়ো” গাইতে লাগিল যথা - ওরে তোরা দরগা পানে আয় দয়াল গাজি। ঐখানেতে রয়,- যেমন দ্বিতীয়ের চাদ ফান্দ পাতিয়ে, তারার গায় আলো দেয়। তেমনি ধারা, জয়নাল আমার ছুরতে বেড়ায়। ইত্যাদি । এইরূপ ভাবের গীত গাইয়া জয়চাঁদ গান নিরক্ষর কৃষক-সমাজে অতি প্ৰতিষ্ঠা লাভ করিয়াই ছিল। আমরা তাহার রচিত সামান্য দুই একটা গীত মাত্ৰ জানি-কিন্তু জয়চাঁদ যে সমাজের কবি সেই সমাজের কৃষক স্ত্রীপুরুষগণ জয়চাঁদ গানের গীত না গাইয়া শীতকালের কোন সময় কৃষিকাৰ্য্য করিয়া থাকে বলিয়া আমরা শুনি নাই। গাজি-গীত প্রায়ই শীতকালে গৃহস্থের বাটীত হইয়া থাকে। যশোহর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর এবং পাবনা জেলার স্থানে স্থানে শীতকালেই জয়চাদের রচিত গাজি গীত প্ৰায় শুনিতে পাওয়া যায়। ইহার রচিত গাজি গীতের মধ্যে আমরা কিন্তু কবিত্ব রস পাই নাই। কেবল নিরক্ষর কবির জীবনী আলোচনায় জয়চাদের ন্যায় নামজাদা গাজি-গীত-রচয়িতার কাহিনী সামান্য মাত্ৰ উল্লেখ করিয়া গাজি গীত রচয়িতার গ্ৰাম্য গীতি প্ৰদৰ্শন করিলাম মাত্র। এই গীতের যত বাহাদুরী সমস্তই ছড়া মধ্যে আবদ্ধ। এই জন্য একটী আমার জানা অল্প কবিত্বময় ছড়া উদ্ধত করিয়া এই কবির জীবনী আলোচনা শেষ করিব । যথা “অনুপ সহরে রাজা চন্দ্ৰভানু নাম সুৰ্য উজল কন্যা তার রূপে দিনমান । একদিন সাজের কালে বসে সরোবরে ফুল তুলি মালা গাথে বিনি সুতি তারে। “দুল দুল ঘোড়া” চড়ি হানিফ, সেথায় ভাঙ্গা চাদ উঠে যেন আসমানের গায়। কন্যা বলে ওরে নেড়ে মরতে আলি ক্যান জান বাচ্ছা কেটে রাজা করবে। খান খান । হানেফ বলে শুন বিবি বলি যে তোমায় ঘাপজান মরেছে তোমার করিয়ে লড়ায়। ইত্যাদি গাজি গীতের ছড়া এইরূপ। এই গীতের এই স্থানেই বিশেষত্ব-এই স্থানেই কবিত্ত্ব। ছড়া বলিতে বলিতে খেড়োগণ মাঝে মাঝে দুই একটী সামান্ত গীত গান করিয়া থাকে। কিন্তু জয়টােব্দ যাত্রায় দলের ছোকরা, তাই তাহার রচিত গাজি গীতে অনেক যাত্রা ভাৰেীয় গীত