বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (দ্বাদশ ভাগ).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* bo> 7・ নিরক্ষর কবি ও গ্ৰাম্যকবিতা br) দুল কয়েকটি বালক, এবং বালকণ্ঠ সদৃশ জন কয়েক কৃষক গায়ক ও এক বা দুইজন বালক সৰ্ব্বোপরি মূলগায়ক বা “বয়ান্তী” থাকে। এই গীতের দলে বৰ্ত্তমান সময়ের রুচি অনুযায়ী বেশ ভুষার তত পারিপাট্য নাই। কিন্তু দুই একদলে সামান্য রকমের কিছু কিছু পরিচ্ছদ আছে। উহাও তত মাৰ্জিত রুচির নহে। বৰ্ত্তমান যাত্রাওয়ালার ন্যায় লম্বালম্বা ৰক্ততা আর ধূমধােম জারী গীতে আদবেই নাই। যৎসামান্য বক্ততা সুরের সঙ্গে গাঁথা আছে। যত কিছু মনোহারিত্বি, যত কিছু বাহাদুরি, যত কিছু কবিত্ব-প্ৰকাশ সমস্তই সঙ্গীতের মধ্যে। এই গীত কবি ও তরজার মত দুইদিলে পান্না, দিয়া হইয়া থাকে। আবার স্থান বিশেষে একদিলেও গীত হয়। কিন্তু পাল্লাপাল্পীর মধ্যে কোনরূপ বিশেষ কিছু বান্ধী নিয়ম নাই অথবা কবিত্ব ফলান নাই। তবে সাধারণ ভাবের বান্ধা পাল্লায় জারীর ধুয়া লইয়া অথবা ছড়া লইয়া দুই দলে পরস্পর গীত হইবার সময় খুব অধিক পরিমাণে দ্বেষাদ্বেষী হয়। যখন উভয় দলের বিয়াতীতে বিয়ান্তীতে পাল্লা চলে, তখন অন্যান্য গায়কগণ কেবল একটী সামান্যপদবিশিষ্ট সুর ভাজিতে থাকে। আবার স্থান বিশেষে ধুৱায় পাল্লা হইয়া থাকে। এই পাল্লা দেওয়া জারী গীত শুনিতে অতি মধুর। অধিকাংশ সময় একটী সামান্য চাঁদোয়া খাটাইয়া ময়দান প্রভৃতি উন্মুক্ত স্থানে জারী গীত হইয়া থাকে। কোন সম্রান্ত হিন্দু জারী গীত দিয়া থাকেন এমন অপবাদ আমরা কখনও শুনি নাই। এদিকে আবার কোন উচ্চপদস্থ মুসলমান এই গীত তাহার বাটীতে দিয়াছেন এরূপ বাক্যও আমাদের কৰ্ণে কোন সময় উঠে নাই। কেবল বারোয়ারী, মেলা প্ৰভৃতি স্থানে এবং কৃষক হইতে উন্নতাবস্থার মুসলমান বাড়ীর বাহির প্রাঙ্গণে এই গীত হইয়া থাকে। যাহাদের জন্য জারী গীত রচিত এবং গীত হয়, তাহারা ইহাকে যত্ন ও আদর করে বলিলেই যথেষ্ট হইল। যে বস্তু ষােহর জন্য প্ৰস্তুত, সে বস্তু তাহার যত্ন ও অভ্যর্থনা পাইলেই যথেষ্ট। দেশের সাধারণ অধিবাসিগণ জারী গীতের স্তাবক, ইহাই হইল জারী গীতের সফলতা । আর কোন কোন রসগ্ৰাহী ভাবুক ভদ্র ব্যক্তি যে জারী গীতকে শ্রাব্য বিষয়ের মধ্যে গণ্য করিয়া থাকেনইহাই জারী গীতের মহত্ব এবং বিশেষত্ব। কোন সময় সৰ্ব্ব প্ৰথমে জারী গীত প্রচলিত হয় তাহা স্থির করা বড় কঠিন। এই প্ৰবন্ধ লিখিবার সময় একদিন কয়েকজন সম শ্রেণীর বন্ধুগণের সঙ্গে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় যে সিপাহী বিদ্রোহের অগ্ৰেও জারী গীত এদেশে প্রচলিত ছিল। যেহেতু “সঙ্গীত-রত্নাৰ্কল্প” নামে বটতলার আদি প্ৰকাশিত পুস্তকে দেখা যায় যে “কোম্পানীর আমলে রাজধানী কৃষ্ণনগরে দুর্গাপূজার কালে কত জারী গীতের প্রচলন ছিল। সেই আমোদেতে পূজার দিনে রাসযাত্রা, চণ্ডীগীত, পাঁচালি, মনসার ভাসান, কবি, পীরের গীত, জারী গীত, পুতুলনাচ, কুস্তিখেলা, নৌকাবাইস, ঘোড়ার দৌড় হইয়া রাজবাড়ীর মান থাকিস্তুত।” । । এখন এই পুরাতন গ্রন্থের পুরাতন বাঙ্গালা ভাষায় বিশ্বাস করিলে জারী গীতের প্রাচীনত্ব মানিতে হয়। আবার কেহ বলেন যে তিনি ১২৬৫৬৫ সালে জারী গীত গায়কগণের SS