পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চদশ ভাগ).pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NOR সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা দেশেও প্ৰত্যেক বিদ্যালয়ে যদি ছাত্ৰাদিগকে মাতৃভাষা ও ইংরেজী ব্যতীত অন্য এক ভাষা শিখাইবার ব্যবস্থা করা যায়, তাহা হইলে উল্লিখিত দোষের আ০শিক প্ৰতীকার হইতে পারে। দেশের কোন ভাষা। এই সাধারণ বা ভারত ভাষা হইলে অধিকাংশের সুবিধা হইতে পারে, তাতার বিবেচনা কৰ্তব্য । এ সম্বনধে নিশ্চয়ই মতভেদ হইবে । কিন্তু যদি বিবতনের নিয়ম ভাষা প্ৰচলনে অপ্ৰতিহত থাকে, তাহা হইলে ভারতভাষা নিশ্চয়ই এমন ভাষা হইবে, যাহা শিখিতে লোকের প্রবৃত্তি হইবে, এবং অধিক পরিশ্রম হইবে না । ভারতের যাবতীয় প্ৰাদেশিক ভাষা সামর্থ্যে সমান নয়। অবশ্য প্ৰত্যেক ব্যকৃতির কাছে মাতৃভাষা উৎকৃষ্ট । দুঃখের বিষয়, বিবর্তন মমতার পক্ষপাতী নয়। যোগ্যের জয় সর্বত্র বটে, কিন্তু ভাষার যোগাতানির্ণয় কঠিন। তিন্দী-ভাষাকে বণিকের ভাষা বলিলে হিন্দীভাষী ভ্ৰাতৃগণ খিন্ন হইতে পারেন । কিন্তু বণিকের ভাষা বলিয়াই ইংরেজী পৃথিবীর বহু স্থানে ব্যাপ্ত হইতে পারিয়াছে। হিন্দী ভাষায় উপভাষা বা ভাখিাভেদ অগ্ৰাহা করিলে এবং গুজরাতাকে হিন্দীভাষার অন্তর্গত মনে করিলে, তিন্দীভাষীর স০ খ্যাধিকা ঐ ভাষার প্রচলনের অনুকুল । কিন্তু অল্পস০ খ্যক লোকের ভাষাও প্ৰাধান্য লাভ করিয়াছে । বিজেত। আ যা অসু তঃ আৰ্যাবতের প্রাচীন ভাষার চিহ্ন পর্যন্ত লুপ্ত করিয়াছে, বিজেতা। আপী ও তুর্কী আফ্রিকার উত্তরাংশের এবং এশিয়া মাইনরের প্রাচীন ভাষা নষ্ট কৰিয়াছে । এখানে কেবল স” গ্রাম জয়ে ভাষা ও প্রাধান্য লাভ করিয়াছিল, এমন নহে ; ভাষার শ্রেষ্ঠ তা প্ৰধান কারণ হইয়াছিল । ভাষার যোগাতাগণনায় তাহার শব্দ সম্পত্তি, মিষ্টতা, প্যাকরণ সুত্রের নমনীয়ত, ভাষার গৌরয ইত্যাদি নানা গুণের সমাবেশ অগ্ৰাহ্য নহে । ভবিষ্যতে যে ভাষার সহিত লড়াই হউক, বাণ গলা ভাষাকে লড়াই করিবার এবং লড়াইতে জয়ী করিবার জোগাড় আবশ্যক । নিজের ঘর দৃঢ় না করিয়া পরের ঘর ভাগ“গিতে যাওয়া মুখত । বাণ গলা ভাষা শেখা সহজ করিতে হইবে, উহাকে সুশ্ৰী ও অন্যের লোভনীয় করিতে হইবে, শিখিবার বই, ব্যাকরণ, কোশ ইত্যাদি উপকরণ উপস্থিত রাখিতে হইবে । লিখিত বাগ গলা শেখা অপেক্ষাকৃত সহজ বটে, কিন্তু বাগলাভাষার সমুদয় অ%গ একত্ৰ শেখা সহজ নহে । এ কথা বলা যাইতে পারে, ভাষাশিক্ষার কাঠিন্য দ্বারা ভাষীর চিন্তা ও মনের জটিলতা যেমন প্ৰকাশ পায়, তেমনই তাহার বিশ্লেষণ ও নির্মাণ শৰকৃতিরও পায় । ইহাও সত্য, কোন ভাষার উপভাষার স০ খ্য। দ্বারা সে ভাষাভাষীর শিক্ষার হীনতা বোঝা যায়। বৎগীয় লেখক, সমালোচক, সাহিত্যসেবক, পরিষদ প্রভৃতি সকলেরই চিন্তা করা আবশ্যক, কি করিলে ভাখা কমাইতে পারা যায়, কি করিলে লিখিত ও কথিত ভাষার অতিরিকত প্ৰভেদ ঘুচাইতে পারা যায়। উপস্থিত লেখকের সামান্য বুদধিতে মনে হয়, উদ্দেশ্য সিদধির দুই পথ আছে, এবং দুই পথই ধরা উচিত । এক পথ ধ্বনি-সংবাদী বানান, অন্য পথ বানান-সংবাদী উচ্চারণ। কোন পথে কত দূর যাইতে পারা যায়, তাহ পরে নিদেশের চেষ্টা করা যাইবে ।