পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S89, সাহিত্য-পরিষৎ-পত্ৰিক । [ ২য় সংখ্যা । দাসম্ভ লিখিতমিতি ৷ ভগ্নপৃষ্ঠ কাটিগ্রীব স্তৰূদৃষ্টিারধোমুখঃ দুঃখেন লিখিতং গ্ৰন্থং শোধয়িষ্যস্তি পণ্ডিতঃ । ভীমস্যাপি রণে ভঙ্গে মুনীনাঞ্চ মতিভ্ৰমঃ । শ্ৰীদুৰ্গাদেব্যৈ নমঃ । শ্ৰীমহাদেব্যৈ নমঃ ৷ শ্ৰীগুরুদেবচরণেভ্যো নমঃ ৷ পিতামাতা চরণেভ্যো নমঃ ৷” গ্ৰন্থকার কাশীরাম দাসের পুর্বতন কি অধস্তন, তাহ নিঃসংশয়ে বলা যায় না, বোধ হয়, পূর্বতন লোক। কোথায় বাস করিতেন, তাহাও জানিবার উপায় নাই। রাঢ়ের কি মালদহের লোক তাহা বলা যায় না । তঁহার ব্যবহৃত অনেক গ্ৰাম্য শব্দ মালদহ জেলার ভাষায় দৃষ্ট হয়। যে গৌরীদাস সাহুর এই পুস্তক তঁহার নিবাস। ফতেপুর। এই গ্রাম পুরাতন মালদহের নিকট ছিল, এখানে এখন লোকের বাম নাই। চৈতন্যের নামে পাগল মালদহের এলাক, চৈতন্যের নামও করে নাই। বোধ হয়, গ্ৰন্থলেখনের সময় মালদহের লোক এখনকার ন্যায় বৈষ্ণব হয় নাই । এই গ্ৰন্থ, জৈমিনির অশ্বমেধপর্ব অবলম্বন করিয়া লিখিত হইয়াছে। যথা :- “অশ্বমেধ পুণ্য কথা, বিচিত্ৰ প্ৰবন্ধ গাথা, মন দিয়া শুনে পুণ্যবান। “ নাশ যায় পাপচয়, পুণ্য হয় আতিশয়, জৈমিনি সংহিতা বচন ৷” এই গ্রস্থে কেবল পয়ার ও ত্রিপদী ছন্দ ব্যবহৃত হইয়াছে। পয়ার ও ত্ৰিপদী নামকরণ হয় নাই। পয়ারকে হ্রস্ব ছন্দ এবং ত্রিপদীকে দীর্ঘ ছন্দ বলা হইয়াছে। পয়ারের চৌদ্দ অক্ষরী নিয়ম সর্বত্র রক্ষিত হয় নাই। চৌদ্দ অক্ষর অপেক্ষা অধিক বা অল্প অক্ষরেও পয়ারের চরণ রচিত হইয়াছে। যথা,- (১) “হেন সে ঘোটক আদি নাহি দেখি কুনো কালে ।” (২) “ত্ৰেতাযুগে ছিল রাম সেনাপতি ।” অধিকাংশ স্থলে “কে” ও “তে” বিভক্তির স্থানে “ক” ও “ত” ব্যবহৃত হইয়াছে, যথা “ঘোড়াকে” ও “বেদোতে” না বলিয়া “ঘোড়াক” ও “বেদেত” বলা হইয়াছে। “যথা” শব্দের স্থলে “জাত” শব্দ ব্যবহৃত হইয়াছে। যথা “জাত জগন্নাথ রূপে বৈসে নারায়ণ ।” “বলিলেন,” “দেখেন,” করিলেন” প্ৰভৃতি নকারান্ত ক্রিয়াপদের স্থলে “বলিলেস্ত,” “দেখেন্ত,"ষ্ট্র “করিলেন্ত” ব্যবহৃত হইয়াছে। যথা,--- “পদ ছন্দে পঢ়েন্ত যত বীরের চরণ ।” “ইয়া” প্ৰত্যয়ের স্থলে ঞিয়া ব্যবহৃত হইয়াছে,-যথা – “করিয়া,” ”বুলিয়া,” “খাইয়া” স্থলে “করিঞা,” “বুলিঞা,” “খাইঞা” প্ৰভৃতি । “উক” প্রত্যয়ের স্থলে “উ” বা “ঔক” ব্যবহৃত হইয়াছে। যেমন “ধরুক” ও “সহক” না বলিয়া “ধরেী,” “সহৌক” ব্যবহৃত হইয়াছে। প্রথম বিভক্তির এক বচনে কখন কখন “এ” ব্যবহৃত হইয়াছে। যথা “রাজা” না। বলিয়া “রাজা এ” বলা হুইয়াছে। t