পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মহারাজ তিলকচাঁদ।
১০৫

নের ঋণ আদায়ের জন্য বর্দ্ধমানের মহারাজের কলিকাতাস্থ রাজবাটী ক্রোক করিয়া তালাবন্ধ করিয়া ফেলিলেন। এই আকস্মিক অত্যাচারে বর্দ্ধমানের মহারাজ মর্ম্মপীড়িত হইয়া, উদ্ধত ইংরাজ-বণিককে শিক্ষা দিবার জন্য, নিজ অধিকার মধ্যে যেখানে যেখানে ইংরাজের বাণিজ্যালয় ছিল, তাহা তালাবন্ধ করিয়া গোমস্তাদিগকে কারারুদ্ধ করিলেন;—বর্ধমান প্রদেশে ইংরাজ-বাণিজ্য বন্ধ হইয়া গেল।[১]আলিবর্দ্দীর শাসনসময়ে জমীদারগণ স্বাধিকার মধ্যে স্বাধীন হইয়া উঠিয়াছিলেন, সুতরাং বর্দ্ধমানরাজের এই কার্যে বিশেষ অপরাধ ছিল না। কিন্তু দোষ কাহার, তাহার অনুসন্ধান না করিয়াই ইংরাজ-দরবার স্থির করিলেন যে, মহারাজের ব্যবহার নিতান্ত অসঙ্গত এবং অপমানজনক-যেরূপে হউক, তাহার প্রতিকার করিতে হইবে।[২]+ ইংরাজবণিক নবাবদরবারে অভিযোগ করিলেন। সিরাজদ্দৌলাই তখন প্রকৃত নবাব,—আলিবর্দ্দীর নামে তিনিই বঙ্গভাগ্য শাসন করিতেছিলেন। সিরাজদ্দৌলা জমিদার দিগের স্বাধীনশক্তিকে দমন করিবার জন্য যেরূপ লালায়িত, তাহাতে এই অভিযোগ শ্রবণ করিয়া তিনি বর্দ্ধমানের মহারাজকে বিলক্ষণ অপ্রতিভ করিবার অবসর পাইলেন। ইংরাজগণ যে নিতান্ত অসঙ্গতরূপে রামজীবনের ঋণের জন্য মহারাজের সম্পত্তি আটক করিয়াছিলেন, সে কথা পড়িয়া থাকিল। মহারাজ তিলকচাঁদ, কি জন্য নবাব-দরবারে অভিযোগ না করিয়া স্বয়ং তাহার প্রতিবিধান করিতে ব্যগ্র হইয়া-

  1. Consultations. 1 April, 1755.
  2. “Upon taking into consideration this affair, the Board are of opinion the Rajah has taken a step by no means warrantable and extremely insolent.”-Long's Selections