পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিরাজদ্দৌলার পলায়ন।
৩৬৯

লাগিলেন। সিরাজ সহসা যুদ্ধক্ষেত্র পরিত্যাগ করিলেন না। মুসলমান ইতিহাসলেখক বলেন যে, যখন দিবা অবসান প্রায়, তখন সিরাজদ্দৌলা দেখিলেন যে বিপুল সেনাপ্রবাহের মধ্যে অল্প লোকেই তাঁহার জন্য যুদ্ধ করিতেছেন; এরূপ অবস্থায় তাঁহার মনে হইল যে,—পলাশিতে পরাজিত হইয়া রাজধানী রক্ষার জন্য মুরশিদাবাদে গমন করাই বুদ্ধিমানের কার্য্য।[১] রাজবল্লভও সেই মত পোষণ করিলেন; সুতরাং সিরাজদ্দৌলা আর ইতস্ততঃ না করিয়া দুই সহস্র অশ্বারোহী সমভিব্যাহারে গজারোহণে যুদ্ধভূমি হইতে প্রস্থান করিলেন![২]

 মীরজাফর সময় পাইয়া ইংরাজদলে যোগদান করিবার জন্য অগ্রসর হইতে লাগিলেন। ইংরাজেরা কিন্তু শক্রমিত্র চিনিতে না পারিয়া তাঁহার উপরও গোলাবর্ষণ করিতে ক্রটি করিলেন না![৩] অপরাহু ৫ ঘটিকা পর্যন্ত অবিশ্রান্ত যুদ্ধ করিতে করিতে মোহনলাল এবং সিনফ্রেঁ বিশ্বাসঘাতক নবাবসেনানায়কদিগের উপর বিরক্ত হইয়া সমরক্ষেত্র পরিত্যাগ করিতে বাধ্য হইলেন। তখন নবাবের পরিত্যক্ত জনশূন্য পটমণ্ডপের দিকে ইংরাজসেনা মহাদম্ভে অগ্রসর হইয়া পলাশি যুদ্ধের শেষ চিত্রপট উদঘাটন করিল![৪]

  1. সিরাজদ্দৌলানে যব্ লস্করকা ইয়া হাল দেখা, নেয়ায়েৎ থৌক্‌মন্ হো খসুস্ তালা আদুসে, কেঁওকে বহুত কম্‌লোগোকে আপনা দোস্ত জান্‌তা থা* * * কৈ ঘড়িভড় রোজ বাকী রহাথা কে খোদাভি ভাগ্ নিক্‌লা। মুতক্ষরীণ (অনুবাদ)।
  2. অর্ম্মি সিরাজদ্দৌলাকে ‘উষ্ট্রারোহণ’ করাইয়াছেন; মেকলে তাহার উপর রং চড়াইয়া ‘দ্রুতগামী’ শব্দ যোগ করিয়া দিয়াছেন। স্ক্রাফ্‌টন যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন, তিনি লিখিয়া গিয়াছেন যে “সিরাজ গারোহণেই পলায়ন করিয়াছিলেন।”
  3. Orme, vol. ii. 176.
  4. It was only when treason had done her work, when treason had driven the Nuab from the field, when treason had removed his