পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিদ্বেষবৃদ্ধির কারণ।
৮৫

করিয়া তুলিতেছিলেন, তাঁহারা এমন সুযোগ ত্যাগ করিতে সম্মত হইলেন না। ইহার জন্য রাণী ভবানী কোনদিনই উচ্চবাচ্য করেন নাই; বরং এ পাপকাহিনী বিলুপ্ত করিবার জন্যই চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু রাজবল্লভপ্রমুখ রাজকর্ম্মচারিগণ জানিতেন যে, সিরাজের বিরুদ্ধে হিন্দুহৃদয় বিদ্বেষবিষে পূর্ণ করিবার এমন সুযোগ আর ঘটিয়া উঠিবে না। রাণী ভবানী যে দেশের প্রাতঃস্মরণীয়া পূজনীয়া দেবী, যে দেশের নরনারী তাঁহার দানশীলতার কথা স্মরণ করিয়া প্রভাতে সায়াহ্নে দুই হাত তুলিয়া জয়ধ্বনি করিয়া থাকে, সে দেশে এই কাহিনীকে লতাপল্লবে সুশোভিত করিয়া তুলিতে পারিলে, জনশ্রুতি-লোলুপ জনসাধারণ যে সহজেই সিরাজদ্দৌলাকে নরপিশাচ বলিয়া বিশ্বাস করিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। রাজবল্লভ এবং জগৎশেঠ তাহা জানিতেন। সুতরাং সকলেই আগ্রহাতিশয্যে এই জনশ্রুতি দেশবিদেশে রটনা করিয়া দিলেন। সিরাজদ্দৌলা সিংহাসনে আরোহণ করিবার পূর্ব্বেই, লোকে তাঁহার নামে শিহরিয়া উঠিতে শিক্ষা করিল।