পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সিরাজদ্দৌলা
হবে? ভাল, হোক! নবাব বাহাদুর, বঙ্গ-বিহার-উড়িষ্যার অধিকারী, দণ্ডমুণ্ডের কর্ত্তা! পতিচীনা, অসহায়া রমণীকে বাসচ্যুত করা তোমার প্রথম নবাবীর পরিচয়। তোমার কূলনারীর সম্পত্তি অপহরণ, তোমার প্রথম রাজকার্য্য। তোমার প্রথম কার্য্যে তোমার কুলনারীর অশ্রু-বিসর্জ্জন;—এই আরম্ভ কিন্তু শেষ নয়। তোমার কূলনারীর অশ্রু, বারিধারার ন্যায় এই বাঙ্গ্‌লায় পতিত হবে, কিন্তু সে অশ্রু-বিসর্জ্জনে বঙ্গভূমি শীতল হবে না। সে অগ্নিময় অশ্রুধারায় নগর দগ্ধ হবে, অট্টালিকা দগ্ধ হবে, রাজ্য ভস্মীভূত হবে, হাহাকার-ধ্বনিতে দিঙ্মণ্ডল পরিপূর্ণ হবে। তোমার কুলনারী আবাসহীনা হওয়া এই প্রথম, শেষ নয়। তোমার কুলনারী আবাসহীনা হবে, পথে পথে ভ্রমণ কর্‌বে, ভিক্ষা-অন্নের জন্য ব্যাকুলা হবে, আকাশ ব্যতীত অপর আচ্ছাদন থাক্‌বে না। মা কোথায় যেতে হবে বলুন, আমি প্রস্তুত।
আলি বেগম। চল মা শিবিকা প্রস্তুত।
ঘসেটী, আলীবর্দ্দী-বেগম ও আমিনার প্রস্থান

জহরার প্রবেশ

সিরাজ। কে তুমি?
জহরা। আমি নবাব-মহিষীর বাঁদী, তাঁহার আজ্ঞায় ঘসেটিবেগমের পরিচ্ছদ নিতে এসেছি।
সিরাজ। তুমি কোথায় থাক?
জহরা। আমি সর্ব্বত্রে থাকি, আমি এক মুহূর্ত্ত স্থির নই। বায়ু যেমন উত্তপ্ত হ’য়ে ঘূর্ণায়মান হয়, আমিও তেমনি অন্তর-তাপে দিবা-রাত্র ঘূর্ণায়মানা! নবাব-দর্শন, দাসীর নিয়তই বাসনা, সেই বাসনা পূর্ণ কর্‌তে এসেছে।
প্রস্থান