পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অঙ্ক
৭৩
মীরজাঃ। তুমি কে? কি বলছ? বঙ্গ-বিহার-উড়িষ্যার অধিপতি ব’লে কাকে অভিবাদন কচ্ছ?
জহরা। মীরজাফর খাঁ, আমার নিকট মনোভাব গোপন ক’রো না, আমায় শত্রু জ্ঞান ক’রো না, তোমার রাজ্য-লিপ্সা অচিরে পূর্ণ হবে। তোমার বলবান সহায় উপস্থিত,—তোমার কার্য্যে রাজকোষ অপেক্ষা ধনপূর্ণ ভাণ্ডার উদ্ঘাটিত হবে।
মীরজাঃ। তুমি কি বল্‌চ? তুমি কে?
জহরা। আমি সয়তানি,—আমার সয়তানি-দৃষ্টিতে ভূত-ভবিষ্যৎ অবগত। তোমার হৃদয়ের সয়তানের প্রতিমূর্তি, তোমার সম্মুখে প্রদর্শন কর্‌বার নিমিত্ত উপস্থিত হয়েছি, তুমি আমায় শত্রু জ্ঞান ক’রো না। তোমার যত অর্থ প্রয়োজন, আমি তোমায় দেব। অর্থলোভী ইংরাজের সহিত মিলিত হও। কার্য্যোদ্ধার করো। আমার কথা মিথ্যা নয়;—তার প্রমাণ স্বরূপ এই হীরকখণ্ড গ্রহণ করো। বাজা রাজবল্লভের সহিত পরামর্শ কর্‌লে জান্‌তে পারবে—এই হীরকখণ্ড কার। এ বহুমূল্য বুঝ্‌তে পেরেছ কি? স্বকার্য্য সাধনে যত্নবান হও।
জহরার প্রস্থান
মীরজাঃ। কে এ? একি ঘসেটি বেগমের সহচরী! সয়তানি বলে পরিচয় দিলে,—যথার্থই সয়তানি। আমার হৃদয়ের সুপ্ত সয়তান জাগরিত করেছে। আলিবর্দ্দীর সময়ে আমার বিদ্রোহ সফল হ’লে, এ বাঙ্গলার গদী আমারই হতো। বাঁদীর কথায় রাজ্য লিপ্সা আবার উত্তেজিত। অমাত্যেরা সকলেই সিরাজের বিরূপ; কিন্তু আমার আশা কি পোষণ কর্‌বে? সকলেরই রাজ্যলিপ্সা, কিন্তু তাদের রাজ্যে অধিকার কি? আমারই প্রকৃত অধিকার