পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
সিরাজদ্দৌলা
রায়দুঃ। ইংরাজ যুদ্ধার্থে প্রস্তুত নয়, এই নিমিত্তই সন্ধিতে সম্মত। সুযোগ প্রাপ্ত হ’লেই, সন্ধি ভঙ্গ ক’রে যুদ্ধে প্রবৃত্ত হবে। তাদের দমন কর্‌বার এই উত্তম সুযোগ। আমরা যুদ্ধার্থে প্রস্তুত হয়েছি, যুদ্ধ করাই সঙ্গত।
সিরাজ। (উমিচাঁদের প্রতি দৃষ্টিপাত)
উমি। জনাব, যদিচ কার্য্যের অনুরোধে ইংরাজের সহিত মৌখিক সদ্ভাব আছে, কিন্তু ইংরাজ আমায় আবদ্ধ করেছিল, আমার আবাস লুণ্ঠন করেছিলো, পরিবারবর্গ ইংরাজের দৌরাত্ম্যে নিহত,—এ সকল এক দণ্ডের নিমিত্ত বিস্মৃত হই নাই! ইংরাজ দমিত হ’লে আমার প্রতিহিংসা তৃপ্ত হয়। আমার মন্তব্য, যুদ্ধ ব্যতীত আর কি হ’তে পারে!
করিম। চাচা, কোল্‌কাতা থেকে পালিয়ে, পল্‌তায় যখন ইংরাজ নোনা পানি খাচ্ছিল, তখন সদ্ভাব ক’রে তাদের সামগ্রী বেচে লাভ করেছ। কেবল দোষ দেখ্‌লেই তো হবে না, গুণও গাও। রসদ যুগিয়ে এক গুণে একশো গুণ তো দাম নিয়েছ চাচা। এক টাকায় একটা চাঁপা কলা বেচেছ। দিনকতক ইংরেজ থাক্‌লে, যা লুট করেছে, তার দুনো আদায় কর্‌বে, ভাবনা কি?
রাজবঃ। জনাব, বান্দাও,—খাঁ সাহেব, বণিকপ্রবর উমিচাঁদ ও রাজা রায়দুর্লভের প্রস্তাবের সম্পূর্ণ অনুমোদন করে।
করিম। (স্বগত) এলোমেলো ক’রে দে মা,—লুটে পুটে খাই!
সিরাজ। কি করিম চাচা, কি বল্‌ছ? তোমার মত কি?
করিম। জনাব, কথার মতামত—না অন্তরের মতামত?
সিরাজ। (ঈষদ্ হাস্য করতঃ) সে কি করিম চাচা?
করিম। আমার কথার মতামত, যাতে ভাল হয় করুন। অন্তরের