ভীষণভাবে যুদ্ধ করিয়া সন্ধ্যার প্রাক্কালে উদয়গড় হইতে কৃষ্ঠা করিয়া ব্রাত্রি এক গ্রহরের মধ্যে পাঁচু ক্রোশ দূরবতী শ্ৰীপুরে উপস্থিত হইলেন। তিনি শ্ৰীপুরের নিকটবতী হইয়া নিঃশব্দে রণক্লান্ত সৈন্যদিগকে আহার ও বিশ্রাম-সুখ Sofie করিতে আদেশ দিলেন। চতুর্দিকে চৌকি স্থাপন করিয়া স্বয়ং সতর্কভাবে সমান্ত সেনার তত্ত্বাবধান করিতে লাগিলেন। কিঞ্চিং রাত্রি থাকিতেই দুইশত অশ্বারোহী এবং এক সহস্ৰ পদাতিক লইয়া বজের ন্যায় ভীষণ গতিতে শত্ৰু-সেনার উপরে পতিত হইবার জন্য কুচ করিলেন। অবশিষ্ট সৈন্যদলকে সমর-সজ্জায় প্রত্নত এবং আহবানমাত্রেই ক্ষুধার্তা ব্যান্ত্রের ন্যায় শক্ৰকুলে আপতিত হইবার জন্য আদেশ করিয়া গেলেন। স্বাদশ পরিচ্ছেদ গুরু-শিষ্য কাপালিককুল-চূড়ামণি ভূভিরাম স্বামী এবং পাপশয় হেমন্দাকান্ত স্বর্ণকে খুঁজিবার ছিল করিয়া তাহদের আরব্ধ কাৰ্য সুসম্পন্ন করিবার জন্য নীেকাযোগে সাদুল্লাপুর পরিত্যাগ করিল। হেমন্দাকান্তের সহকারী গুণ্ডার দল স্বর্ণকে লইয়া পূর্ব পরামর্শানুসারে ইদিলপুরের নিবিড় জঙ্গলে আশ্রয় লইয়াছিল। তখন স্বর্ণকে লইয়া । নীেকাপথে বেশীদূর ভ্ৰমণ করিলে, পাছে কেহ কোন সন্ধান পায়, এজন্য স্বামী ও শিষ্য ইদিলপুরের নির্জন কাননেই আপনাদের পাপ অভিসন্ধি সম্পাদনের নিরাপদ আশ্রয় মনে করিয়াছিল। গুণ্ডার দল স্বৰ্ণময়ীকে লইয়া সেই কাননাভ্যন্তরে কুটীৱ রচনা করিয়া বাস করিতেছিল। তিন দিবস পরেই পাপাত্মা অভিরাম স্বামী ও হেমন্দাকান্ত সেই কাননাভ্যন্তরে প্রবেশ করিল। তাহারা রোরুদ্যমান এবং ক্ষিপ্তমনা স্বর্ণকে নানাপ্রকারে সান্তনা প্ৰদান করিতে এবং প্ৰবোধ দিতে ও পাপপ্রলোভনে ভুলাইতে চেষ্টা করিল। স্বর্ণময়ী তাহদের বাক্য শ্রবণে যার-পর-নাই মৰ্মপীড়িত হইল। সে কখন ক্ৰন্দন, কখন তর্জন-গর্জন করিয়া তাহাকে ফিরাইয়া দিবার জন্য অনুরোধ করিতে লাগিল। কিন্তু “চােরা না শুনে ধর্মের কাহিনী” । স্বর্ণের মানসিক উত্তেজনা এবং উৎক্ষিণ্ড-ভাব দর্শনে স্বামী-শিষ্য মিলিয়া তাহাকে কঠোরভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়া রাখিল। স্বর্ণ যখন দেখিল, তাহার কষ্ট ও নির্যাতন চরমে উঠিয়াছে এবং অল্পদিনের মধ্যে পাপ-সংকল্পে সম্মত না হইলে, পাষণ্ডদ্বয় বল-প্রকাশেও কুষ্ঠিত হইবে না, তখন সে এই বিষম বিপদ হইতে উদ্ধার পাইবার জন্য এক কৌশলজাল বিস্তারের কল্পনা করিতে লাগিল। মাকড়সা যেমন আশ্ৰয়াশূন্য হইলেই নিজের দেহের ভিতর হইতে সূত্র নির্গত করিয়া জাল নির্মাণ পূর্বক আপনাকে আশ্রয়-সংস্থিত করে, মানুষও তেমনি বিপদে পড়িলেই তাহার ዓxo
