পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অতি নিতৃত কোণে লুক্কায়িত ছিল— প্রবল তরঙ্গ-ভঙ্গে আবর্তি রচিয়া ফুলিয়াফাঁপিয়া সাগর-সঙ্গমে দুটিয়া চলিল। পরামর্শ ঠিক হইয়া গেল। পর দিবস রাত্রি থাকিতেই হেমন্দাকে নিরাশার অন্ধকারে নিক্ষেপ করিয়া সেই কানন-পথেই *ळाशन कब्रिाऊ शरें । রাত্রি এক প্রহর থাকিতেই অভিরাম স্বামী শয্যা ত্যাগ করিয়া স্বর্ণকে লইয়া সেই কাননের অন্ধকার-পথে দক্ষিণদিকে অগ্রসর হইতে লাগিল। নৌকাপথে অন্য কোন দিকে পলায়ন করিলে, হেমন্দা তাহার সন্ধান পাইতে পারে, এই আশঙ্কায় সেই কাননের দক্ষিণভাগে অগ্রসর হইতে লাগিল। কাপালিক চিন্তা করিল যে, আমরা যে আশ্রম ত্যাগ করিয়া পুনরায় এই কাননের অন্যত্র আশ্রয় লাইবা, হেমন্দা তাহা কল্পনাও করিতে পরিবে না। এদিকে হেমন্দা যথাসময়ে গাত্ৰোথান করিয়া স্বর্ণ ও অভিরাম স্বামীকে দেখিতে না পাইয়া অত্যন্ত ব্যস্তসমস্ত হইয়া উঠিল। তাহার বক্ষের স্পন্দন যেন থামিয়া যাইতে লাগিল। সে চঞ্চল পদে এদিক-ওদিক খুঁজিয়া দুইজনের একজনকেও দেখিতে পাইল না। শেষে অনুসন্ধান করিয়া দেখিল, উভয়ের বস্ত্ৰ, অলঙ্কার ও অন্যান্য মূল্যবান হালকা জিনিস-পত্র কিছুই নাই। তখন হেমন্দা দুঃখে ও ক্ষোভে প্ৰজ্বলিত প্ৰায় হইয়া উঠিল। অভিরাম স্বামী তাহার চক্ষে প্রকট শয়তান বলিয়া প্ৰতিভাত হইতে লাগিল। তাহার প্রতিহিংসাবহ্নি একেবারে নতঃস্পশী হইয়া উঠিল। তাহাকে অনন্তকাল নরকানলে দণ্ড করিলে এবং কুটী কুটী করিয়া কাটিলেও তাহার ক্ৰোধ কিছুতেই শান্ত হইবে না। স্বর্ণ এবং স্বামীজি কোন পথে কোথায় পলায়ন করিয়াছে, তন্নির্ধারণই তাহার একমাত্র চিন্তার বিষয়ীভূত হইয়া উঠিল। সে অনেক ভাবিয়া শেষে কানন-পথেই উড়ো-পাখির পশ্চাদ্ধাবিত হইল। স্বামী এবং স্বর্ণ যে-পথে পলায়ন করিয়াছিল, সে-পথে অনেক লতা ও গাছের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শাখা ভগ্ন এবং নত হইয়া পড়িয়াছিল। স্থানে স্থানে বর্ষা-বারি-পুষ্ট ঘাসের মাথা দলিত হইয়াছিল। হেমন্দা বহু কটে সেই সমস্ত চিহ্নের অনুসরণ করিয়া দ্রুত অগ্রসর হইতে লাগিল। অভিরাম স্বামী এবং স্বর্ণময়ী দ্রুতপদে দক্ষিণাভিমুখে ক্ৰমাগত চলিতে ছিল। বেলা দুই প্ৰহরের সময় তাহারা ক্ষুৎপিপাসায় অত্যন্ত কাতর হইয়া এক স্থানে বিশ্ৰাম করিতে লাগিল। সঙ্গে যে যৎসামান্য ফল-মূল ছিল, স্বামীজি পরম যত্নে তাহা স্বৰ্ণকে খাওয়াইতে লাগিল। যে স্থানে বসিয়া তাহারা জলযোগ করিতেছিল, সে স্থান মাহতাব খাঁর আশ্রম হইতে বেশী দূর নহে। স্বর্ণ এবং অভিরাম স্বামী জলযোগান্তে সে স্থান হইতে প্ৰায় উঠিবার উপক্ৰম করিতেছিল, এমন সময়ে অপহৃত-শিকার শার্দুলের ন্যায় ক্রুদ্ধ ও রুদ্রমূর্তি হেমন্দাকান্ত পশ্চাদ্দেশ্য হইতে আসিয়া একলম্মে অভিরাম স্বামীর স্কন্ধাদেশে ভীষণ থ প্ৰহাৱা করিল। অভিরাম স্বামী বিকট চীৎকার করতঃ বনভূমি বিকম্পিত করিয়া দশ হাত দূরে যাইয়া ዓ6እ