প্রথম খণ্ড–চতুর্থ পরিচ্ছেদ S\o বৃক্ষারূঢ় ব্যক্তি উপর হইতে বলিল, “না।” “তবে বোধ হয়, নারায়ণ রক্ষা করিলেন।” পাঠক বুঝিয়া থাকিবেন যে, এই স্ত্রীলোক ঐ। বৃক্ষোপরি স্বয়ং চন্দ্রচূড় তর্কালঙ্কার। বৃক্ষশাখা ঠিক তার উপযুক্ত স্থান নহে, কিন্তু তর্কালঙ্কার মনে করিতেছিলেন, “আমি ধৰ্ম্মাচরণনিযুক্ত, ধর্মের জন্য সকলই কর্তব্য।” . . স্ত্রীর কথার উত্তরে চন্দ্রচূড় বলিলেন, “নারায়ণ অবশ্ব রক্ষা করিবেন। আমার সে ভরসা আছে। তুমি উতলা হইও না। কিন্তু এখনও রক্ষার উপায় হয় নাই বোধ হইতেছে। কতকগুলা লালপাগড়ি আসিতেছে, দেখিতে পাইতেছি।” শ্ৰী । কিসের লাল পাগড়ি ? চন্দ্রচূড় ৷ বোধ হয় ফৌজদারি সিপাহী । বাস্তবিক দুই শত ফৌজদারি সিপাহী সশস্ত্র শ্রেণীবদ্ধ হইয়া গঙ্গারামকে ঘেরিয়া লইয়া আসিতেছিল। দেখিয়া সেই অসংখ্য জনতা একেবারে নিস্তব্ধ হইয়া দাড়াইল । যেমন যেমন দেখিতে লাগিলেন, চন্দ্রচূড় সেইরূপ শ্ৰীকে বলিতে লাগিলেন। শ্ৰী জিজ্ঞাসা করিল, “কত সিপাই ?” চন্দ্র। দুই শত হইবে। শ্ৰী । আমরা দীন দুঃখী—নিঃসহায় । আমাদের মারিবার জন্য এত সিপাহী কেন ? চন্দ্র। বোধ হয়, বহুলোকের সমাগম হইয়াছে শুনিয়া, সতর্ক হইয়া ফৌজদার এত সিপাহী পাঠাইয়াছেন । স্ত্রী। তার পর কি হইতেছে ? চন্দ্র । সিপাহীরা আসি শ্রেণী বাধিয়া, প্রস্তুত কবরের নিকট দাড়াইল । মধ্যে গঙ্গারাম । পিছনে খোদ কাজি, আর সেই ফকির। শ্ৰী। দাদা কি করিতেছেন ? চন্দ্র। পাপিষ্ঠের তার হাতে হাতকড়ি, পায়ে বেড়ী দিয়াছে। ত্রিী । ব দিতেছেন কি ? চন্দ্র । না। নিঃশব্দ–নিস্তব্ধ। মূৰ্ত্তি বড় গম্ভীর, বড় সুন্দর। খ্রী। আমি একবার দেখিতে পাই না ? জন্মের শোধ দেখিব । চন্দ্র। দেখিবার সুবিধা আছে। তুমি এই নীচের ডালে উঠিতে পার ? শ্ৰী। আমি স্ত্রীলোক, গাছে উঠিতে জানি না ।
