পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
সীতার বনবাস।

করিতে বলিয়াছিলাম; সে এই আলেখ্য প্রস্তুত করিয়া আনিয়াছে, অবলোকন করুন। রাম বলিলেন, বৎস, দেবী দুর্মনায়মানা হইলে, কি রূপে তাঁহার চিত্তবিনোদন করিতে হয়, তাহা তুমিই বিলক্ষণ জান; তা জিজ্ঞাসা করি, এই চিত্রপটে কি পর্য্যন্ত চিত্রিত হইয়াছে? লক্ষণ, বলিলেন, আর্য্যা জানকীর অগ্নিপরিশুদ্ধিকাণ্ড পর্য্যন্ত।

 রাম শুনিয়া সাতিশয় ক্ষুব্ধ হইয়া বলিলেন, বৎস, তুমি আমার সমক্ষে আর ও কথা মুখে আনিও না; ও কথা শুনিলে, অথবা মনে হইলে, আমি সাতিশয় কুণ্ঠিত ও লজ্জিত হই। কি আক্ষেপের বিষয়! যিনি জন্মপরিগ্রহ করাতে জগৎ পবিত্র হইয়াছে, তাঁহাকে আবার অন্য পাবন দ্বারা পূত, করিতে হইয়াছিল। হায়! লোকরঞ্জন কি দুরূহ ব্রত। সীতা বলিলেন, নাথ, সে সকল কথা মনে করিয়া, আপনি ‘অকারণে ক্ষুব্ধ হইতেছেন কেন? আপনি তৎকালে সদ্বিবেচনার কর্ম্মই করিয়াছিলেন; সেরূপ না করিলে, চিরনির্মল রঘুকুলে কলঙ্কস্পর্শ হইত, এবং আমারও অপবাদবিমোচন হইত না। সীতার বাক্য শ্রবণগগাচর করিয়া, রামচন্দ্র দীর্ঘনিশ্বাসপরিত্যাগ পূর্ব্বক বলিলেন, প্রিয়ে, আর ও কথায় কাজ নাই; এস, আলেখ্য দেখি।

 সকলে আলেখ্যদর্শনে প্রবৃত্ত হইলেন। সীতা, কিয়ৎ ক্ষণ, ইতস্ততঃ - দৃষ্টিসঞ্চারণ করিয়া জিজ্ঞাসিলেন, নাথ,