পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
সীতার বনবাস।

বলিয়াছ, যখন মহর্ষি শতানন্দ তোমার কমনীয় কোমল করপল্লব, আমার করে সমর্পিত করিয়াছিলেন, যেন সেই সময় বর্ত্তমান রহিয়াছে।

 চিত্রপটের স্থলান্তরে অঙ্গুলিনির্দ্দেশ করিয়া, লক্ষণ বলিলেন, এই আর্য্যা, এই আর্য্যা মাণ্ডবী, এই বধু শ্রুতকীর্ত্তি; কিন্তু তিনি, লজ্জাবশতঃ, ঊর্ম্মিলার উল্লেখ করিলেন না। সীতা বুঝিতে পারিয়া, কৌতুক করিবার নিমিত্ত, হাস্যমুখে উর্মিলার দিকে অঙ্গুলিপ্রয়োগ করিয়া, লক্ষ্মণকে জিজ্ঞাসিলেন, বৎস, এ দিকে এ কে চিত্রিত রহিয়াছে? লক্ষ্মণ, কোনও উত্তর না দিয়া, ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, দেবি, দেখুন দেখুন, হরশাসনের ভঙ্গবার্ত্তাশ্রবণে ক্রোধে অধীর হইয়া, ক্ষত্রিয়কুলান্তকারী ভগবান্ ভৃগুনন্দন, আমাদের অযোধ্যাগমনপথ রুদ্ধ করিয়া দণ্ডায়মান আছেন; আর, এ ‘ দিকে দেখুন, ভুবনবিজয়ী আর্য্য, তাঁহার দর্পসংহার করিবার নিমিত্ত, শরাসনে শরসন্ধান করিয়াছেন। রাম আত্মপ্রশংসাবাদশ্রবণে অতিশয় লজ্জিত হইতেন; এজন্য বলিলেন, লক্ষ্মণ, এই চিত্রে আর আর নানা দর্শনীয় আছে, ঐ অংশ লইয়া আন্দোলন করিতেছ কেন? সীতা রামবাক্যশ্রবণে আহ্লাদিত হইয়া বলিলেন, নাথ, এমন না হইলে, সংসারের ললাকে, একবাক্য হইয়া, আপনার এত প্রশংসা করিবে কেন?

 তৎপরেই অযোধ্যাপ্রবেশকালীন চিত্র নেত্রপথে পতিত