পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৫

যে, সীতার জাগরণ পর্য্যন্ত অপেক্ষা করিতে পারিলেন না; আস্তে আস্তে, আপন হস্ত হইতে তাঁহার মস্তক নাইলেন, এবং, দুর্মুখকে সমভিব্যাহারে লইয়া, সত্বর সন্নিহিত গৃহান্তরে প্রবেশ করিলেন।

 এই রূপে গৃহান্তরে উপস্থিত হইয়া, রাম, সাতিশয় ব্যগ্রতাপ্রদর্শন পূর্ব্বক, দুর্মুখকে বলিলেন, বিলম্ব করিও না, কি শুনিয়াছ, বিশেষ করিয়া বল; তোমার আকার প্রকার দেখিয়া, আমার অন্তঃকরণে নানা সংশয় উপস্থিত হইতেছে। সে বলিল, মহারাজ, যে সর্ব্বনাশের কথা শুনিয়াছি, তাহা মহারাজের নিকট বলিতে হইবে এই মনে করিয়া, আমার সর্ব্ব শরীরের শোণিত শুষ্ক হইয়া যাইতেছে। কিন্তু যখন, পূর্ব্বাপর পর্য্যালোচনা না করিয়া, ওরূপ কার্য্যের ভার লইয়াছি, তখন অবশ্যই বলিতে হইবে। আমি যেরূপ শুনিয়াছি, নিবেদন করিতেছি, আমার অপরাধগ্রহণ করিবেন না। মহারাজ, প্রায় সকলেই, একবাক্য হইয়া, অশেষ প্রকারে, সুখ্যাতি করিয়া বলে, আমরা রামরাজ্যে পরম সুখে বাস করিতেছি; কোনও রাজা, কোশল দেশে, শাসনের এরূপ সুপ্রণালী প্রবর্ত্তিত করিতে পারেন নাই। কিন্তু, কেহ কেহ, রাজমহিষীর উল্লেখ করিয়া, কুৎসা করিয়া থাকে। তাহারা বলে, “আমাদের রাজার চিত্ত বড় নির্বিকার; একাকিনী সীতা এত কাল রাবণগৃহে রহিলেন; তিনি, তাহাতে কোনও