পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৩৫

এজন্য, আমি প্রতিজ্ঞা করিয়াছি, জানকীরে আর গৃহে রাখিব না। সর্ব্ব প্রযত্নে প্রজারঞ্জন, রাজার পরম ধর্ম্ম। যদি তাহাতে কৃতফার্য্য হইতে না পারি, নিতান্ত অনার্য্যের ন্যায়, বৃথা জীবনধারণের ফল কি বল। এক্ষণে, তোমরা, প্রশস্ত মনে, অনুমোদন কর; তাহা হইলে, আমি উপস্থিত সঙ্কট হইতে পরিত্রাণ পাই।

 অগ্রজের এই কথা শ্রবণগগাচর করিয়া, অনুজেরা যৎপরোনাস্তি বিষন্ন হইলেন; এবং, ভয়ে ও বিস্ময়ে একান্ত অভিভূত ও কিংবর্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ, অধোমুখে মৌনভাবে অবস্থিতি করিলেন। পরিশেষে, লক্ষ্মণ, অতি কাতর স্বরে, বিনীত ভাবে, নিবেদন করিলেন,—আর্য্য, আপনি যখন যে আজ্ঞা করিয়াছেন, আমরা কখনও তাহাতে দ্বিরুক্তি বা আপত্তি করি নাই। এক্ষণেও, আমরা আপনার আজ্ঞাপ্রতিরোধে প্রবৃত্ত নহি। কিন্তু, আপনকার প্রতিজ্ঞা শুনিয়া, আমাদের প্রাণপ্রয়াণের উপক্রম হইয়াছে। আমরা যে, আপনার নিকটে আসিয়া, এরূপ সর্ব্বনাশের কথা শুনিব, এক মুহূর্ত্তের নিমিত্ত, আমাদের অন্তঃকরণে সে আশঙ্কার উদয় হয় নাই। যাহা হউক, এ বিষয়ে আমার কিছু বক্তব্য আছে, যদি অনুমতি প্রদান করেন, নিবেদন করি।

 লক্ষ্মণের এই বিনয়পূর্ণ কাতর বাক্য শ্রবণগগাচর করিয়া,