পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বাদশ অধ্যায় । ১৯১ সমাসীন ঋষিগণের মুখে রাবণাদি রাক্ষসগণের অপূৰ্ব্ব জন্মবৃত্তাস্ত ও পৌরুষপরাক্রমের কথা শ্রবণ পূৰ্ব্বক অতিশয় বিস্মিত হইলেন। এইরূপে বহুকাল অতিবাহিত হইয়া গেল। রাবণ প্রভৃতির জন্ম, তপস্যা ও দিগ্বিজয় সম্বন্ধে সমস্ত বক্তব্যই শেষ হইলে, মহর্ষিগণ বিদায় গ্রহণ পূৰ্ব্বক স্ব স্ব স্থানে প্রস্থান করিলেন। তদনন্তর মহারাজ রামচন্দ্র, রাজর্ষি জনক, বয়স্ত কাশীরাজ, মাতুল যুদ্ধাজিৎ প্রভৃতি রাজগণকে যথোচিত সন্মানিত করিয়া বিদায় দিলেন । তাহারা প্রস্থান করিলে, তিনি রাজকাৰ্য্যে মনোনিবেশ করিলেন এবং প্ৰজাগণের সর্ববিধ শ্ৰীবৃদ্ধিসাধন করিয়া প্রফুল্লমনে অশোক কাননে প্রবেশ করিলেন। অশোকবন মনোহর রাজোদ্যান ; উহ নানাবিধ সুন্দর বৃক্ষ ও পুষ্পিত লতায় সমাকীর্ণ। নানাস্থানে সুগন্ধি পুষ্প সকল প্রস্ফুটিত ও বৃক্ষসকল রসালফলভরে অবনত। কোথাও অপূৰ্ব্ব লতাগৃহ, কোথাও তৃণাচ্ছাদিত হরিদ্বর্ণ ক্ষেত্র, কোথাও হংসসারসনিনাদিত কমলশোভিত স্বচ্ছ সরোবর এবং কোথাও বা সুন্দর পুপবাটিক। রামচন্দ্র রাজকাৰ্য্য পরিদর্শন করিয়া সাতাদেবীর সহিত এই মনোরম অশোককাননে প্রবেশ পুৰ্ব্বক পরমমুখে কালাতিপাত করিতে লাগিলেন । সীতাদেবী এখন রাজমহিষী। সীতা ইতঃপূৰ্ব্বে রত্নৈশ্বৰ্য্য পরিত্যাগ করিয়া স্বামীর সহিত অরণ্যে গমন করিতে অনুমাত্রও অনিচ্ছা প্রদর্শন করেন নাই। আমরা দেখিয়াছি তিনি স্বামিসহবাসে গভীর অরণ্যকেও কেমন মনোহর রাজোদ্যানে পরিণত করিয়াছিলেন। সীতাদেবী রাজকন্তা রাজবধু ও অতিশয় মুকুমারী হইয়াও অরণ্যের কষ্টে একটী দিনও সামান্ত কাতরতা প্রকাশ করেন নাই। স্বামিদহবাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের প্রতি অলৌকিক অমুরাগ, এই দুইটি কারণেই তিনি ছঃখ কাহাকে বলে তাহা জানিতে সমর্থ হন