পাতা:সুকান্ত সমগ্র.djvu/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করে, হাতে থাকে বুভূক্ষার শাণিত-খড়গ আর অক্ষমতার হাঁড়ি-কাঠে তাদের মাথা কাটা পড়ে। এই তো জীবন। প্রথম যৌবনের অলস অসতর্ক মুহূর্তে আমরাই আমাদের শ্মশানের চিতা সাজাই হাস্যমুখর দিনের পরিবেশনে। অশিক্ষিত আমাদের দেশে যৌবনে দুর্ভিক্ষ আসবেই। আর তারই বহ্নিময় ক্ষুধা আমাদের মনকে তিক্ত, অতৃপ্ত, বিকৃত করে তোলে। জীবনে আসে অনিত্যতা, জীবনীশক্তি যায় ফুরিয়ে, কাজে আসে অবহেলা, ফাঁকি আমরা তখনই দিতে শিখি আর তখনই আসে জীবনকে ছেড়ে চুপি চুপি সরে পড়বার দুরস্ত দুরভিসন্ধি।

 আমার কর্মশক্তিও যাত্রার প্রারম্ভেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ছে এই ধূলিধূসরিত কুয়াশাচ্ছন্ন পথেই। অবসাদের শূন্যতা জানিয়ে দেয় পথ অনেক কিন্তু পেট্রোল নেই। তোমরা দিতে পার এই পেট্রোলের সন্ধান? বহু দিন অব্যবহৃত ষ্টীয়ারিংএ মরচে পড়ে গেছে, সে আর নড়তে চায় না, ঠিক পথে চালায় না—আমাকে। তোমরা মুছিয়ে দিতে পার সেই মলিনতা, ঘুচিয়ে দিতে পার তার অক্ষমতা?

 যাক, আগের চিঠির উত্তর দাও নি কেন? পায়ে পড়ে মিনতি জানাই নি বলে, না আমার মতে অভাজনের এ আশাতিরিক্ত বলে? রবীনের চিঠির সঙ্গে চিঠি দিলাম তারই খরচায়। আমার চিঠির উত্তর না দাও রবীনেরটা দিও। আমাদের Examination ২৮শে এপ্রিল। প্রাইজ ১৯শে; সেদিন আসতে পার। খোকনকে৫৬ আমায় চিঠি দিতে ব'লো। ঘেলুর খবর কী? ইতি

সুকান্ত
৩৩২