বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দাদা ঘাড় বেঁকিয়ে, মুচকি হেসে আর একবার টেঁপিদের দিকে তাকালেন। ভাবখানা এই যে, আমি থাকতে রাজুমামা-ফাজুমামার দরকার কি?

 ফ্যাঁস-ফোঁস-ছররর! এত শিগ্গির যে হাউয়ের আগন ধরে যায় সেটা দাদার খেয়ালেই ছিল না, দাদা তখনো ঘাড় বেঁকিয়ে, হাসি-হাসি মুখ করে, নিজের বাহাদুরির কথা ভাবছেন। কিন্তু হাসিটি না ফুরোতেই হাউই যখন ফ্যাঁস করে উঠল, তখন সেই সঙ্গে দাদার মুখ থেকেও হাঁউমাউ গোছের একটা বিকট শব্দ আপনা থেকেই বেরিয়ে এল। আর তার পরেই দাদা যে একটা লম্ফ দিলেন, তার ফলে দেখা গেল যে ছাতের মাঝখানে চিৎপাত হয়ে অত্যন্ত আনাড়ির মতো তিনি হাত-পা ছুঁড়ছেন। কিন্তু তা দেখবার অবসর টেঁপিদের হয় নি। কারণ দাদার চিৎকার আর লম্ফভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গে তারাও কান্নার সুর চড়িয়ে বাড়ির ভেতরদিকে রওনা হয়েছিল।

 কান্নাটান্না থামলে পর রাজুমামা যখন দাদার কান ধরে তাকে ভেতরে নিয়ে এলেন, তখন দেখা গেল যে, দাদার হাতের কাছে ফোস্কা পড়ে গেছে আর গায়ের দু’তিন জায়গায় পোড়ার দাগ লেগেছে। কিন্তু তার জন্য দাদার তত দুঃখ নেই, তার আসল দুঃখ এই যে, টেঁপির কাছে তার বিদ্যেটা এমন অন্যায়ভাবে ফাঁস হয়ে গেল। রাজুমামা চলে যেতেই সে হাতে মলম মাখতে মাখতে বলতে লাগল, কোথাকার কোন দোকান থেকে হাউই কিনে এনেছে—ভালো করে মশলা মেশাতেও জানে না। বিষ্টু

১৯০
সুকুমার সমগ্র রচনাবলী